চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মামলা ‘আপসযোগ্য’ করতে আইনের ধারা সংশোধনের নির্দেশ

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারাটিকে সংশোধন করে ‘আপসযোগ্য’ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে এই আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত নারী শিশু ট্রাইব্যুনালগুলোকে হাইকোর্টের এই রায় অনুসরণ করতে অর্থাৎ, ১১(গ) ধারার মামলার কোনো পক্ষ যদি আপস করতে চায় তাহলে আপস করার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেন।

রায়ে আগামী ৬ মাসের মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ধারাটি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং উইংকে এ বিষয়ে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।

আদালত তার রায়ে বলেছেন, ‘আমাদের আইনগুলো বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর মত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আপসের বিধান নেই। অথচ অনেক যৌতুকের মামলায় স্বামী ও স্ত্রী একপর্যায়ে আপস করতে চান। কিন্তু আপসের বিধান না থাকায় আসামির সাজা হয়ে যায়। তাই এ আইনটি সংশোধন হলে বা বিচারকই আদালতের অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে, সাক্ষ্য-প্রমাণের দরকার পড়বে না। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা বা মামলাজট কমবে।

আদালতে লাভলী আক্তারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান মাহমুদ খান। আর স্বামী মো. শফিকুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সামিউল হক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।

এই মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, চার লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী লাভলী আক্তার স্বামী মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে মামলা করে। দুই জনের বাড়িই কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে। কিন্তু শফিকুল ইসলামের চাকরির কারণে স্বামী-স্ত্রী দুজনই চট্টগ্রামে থাকতেন। ২০১৪ সালের ১০ জুলাই মামলার আসামি শফিকুলকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

কিন্তু দুই বছর পর সাজার রায় বাতিল চেয়ে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন শফিকুল। হাইকোর্ট তখন তাকে জামিন দেয় এবং সাজা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। এর মধ্যে তাদের দু’জনার মিল হয়ে যায়। কিছুদিন আগে তাদের একটি সন্তান হয়। সেই সন্তানের বয়স আড়াই মাস। বুধবার রায় ঘোষণার দিন আড়াই মাসের ঐ সন্তানকে নিয়েই স্বামী-স্ত্রী হাইকোর্টে হাজির হন।

একপর্যায়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষরের পর আদালত শফিকুলকে বলে, ভবিষ্যতে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর তার তিন বছরের সাজা বাতিল করেন হাইকোর্ট।