ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্রান্ড ইমাম ও জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেছেন, মানুষ হত্যা ও জঙ্গিবাদ হুর-পরীর বেহেস্ত পাবার পথ নয়, এটা জাহান্নামের পথ। সারাদেশ থেকে এক লক্ষ আলেম ও ইমামের সাক্ষর সংগ্রহ করে দেয়া ফতোয়া উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা। গুম, হত্যাসহ জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর বিরুদ্ধে সারাদেশের এক লক্ষ আলেম ও ইমামদের কাছ থেকে সাক্ষর সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি।
৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সংগৃহীত মতামতের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে ৩০ খণ্ডের ফতোয়া যেখানে আলেম ও ইমামদের সাক্ষর ও পরিচয় দেয়া হয়েছে।
ফতোয়ার প্রথমে সংযুক্ত করা হয়েছে সূরা মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াত। যেখানে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রাণ হত্যা বা দুনিয়ার ধ্বংসাত্মক কাজ করা ব্যতীত কেউ কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকে হত্যা করলো। আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানবের প্রাণ রক্ষা করলো’।
জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ফরীদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, ‘জঙ্গিবাদ বেহেস্ত পাবার পথ হতে পারে না। তারা তাদের মৃত্যুকে শহীদী বলে চালিয়ে দিতে চায়। এবং এই বিশ্বাসে তারা মৃত্যুবরণ করে। আমরা কোরআন-হাদিস এনে দেখিয়েছি এভাবে আত্নঘাতী মৃত্যু শহীদী মৃত্যু নয়। সে তো মনে করে যে সে মরলেই বেহেস্তের হুর-পরীরা তার জন্য মালা নিয়ে অপেক্ষা করছে। কিন্তু এটা হুর পরীর বেহেস্ত পাবার পথ নয়, জাহান্নামের পথ। সেটাই আমাদের বোঝাতে হবে। সেটাই আমরা মৌলিকভাবে তুলে ধরেছি।’
আইন বা পুলিশ দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কয়েকটি গোষ্ঠী ছাড়া এই ফতোয়া সবার প্রতিনিধিত্ব করছে বলে দাবি তার।
ফরীদ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি স্পষ্ট যে তাদের মনের বৈকল্য দূর করতে না পারলে কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এদের দমন করা সম্ভব নয়। কারণ এসব সন্ত্রাসীরা ধর্মের নামে আত্নদানে প্রস্তুত। তাদের চেতনার ভুল দূর করা দরকার সবার আগে। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের পক্ষে তা করা সম্ভব। আমরা সকল আলেমদের প্রতিনিধিত্ব করছি শুধু যারা জঙ্গিবাদী তারা ছাড়া।
এক লক্ষ আলেম, ইমামের মধ্যে দেশের প্রায় ১০ হাজার নারী আলেম রয়েছেন। খুব শিগগিরই আরবী ও ইংরেজি ভাষায় এই ফতোয়া প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।