মানুষ খুন করলেই বেহেস্তের দরজা খুলবে নাবলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা হুর-পরী পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটা কোন ধরনের অদ্ভূত চিন্তাভাবনা! কিভাবে তারা এই অবস্থানে আসলো! কারা তাদের মদদ দিলো! সাংবাদিকদের এবং সবাইকে বলবো আপনারা একটু বুঝতে সাহায্য করুন যে তাদের সাইকোলজিটা কি। তাদের কোনো অভাব নেই, তবু তারা কেন এই পথ বেছে নিচ্ছে। মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা কখনোই খুলে না।
মঙ্গোরিয়ার উলানবাটোরে অনুষ্ঠিত আসেম সম্মেলন শেষে দেশে ফিরে রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গুলশানের হলে আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নিহতদের জন্য বিশ্বনেতাদের কাছে দু:খ প্রকাশ করেন তিনি। দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমানুষের
ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গোলিয়ায় শেষ হওয়া আসেম সম্মেলন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের বেশির ভাগ অংশই ছিলো সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলা নিয়ে, যা এখন শুধু বাংলাদেশকে নয়, পুরো বিশ্বকেই চিন্তায় রেখেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হামলায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের মর্যাদায় কিছুটা ছেদ পড়েছে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিশ্বনেতাদের তিনি এই বার্তা দিয়ে এসেছেন যে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্ট’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের ঐক্য হলে পরে এসব জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে তাদের ঐক্য ঠিকই গড়ে উঠেছে এবং সেটা থাকবে। বাংলাদেশে সবসময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী। তাই সবাইক স্ব স্ব অবস্থানে সচেতন থাকতে হবে।
এসময় আসেম সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি জঙ্গিবাদের উৎস ও
মদদদাতাদের খুঁজে বের করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আবারো আহবান জানান তিনি।
বিদেশীদের চেয়ে দেশের ভেতরের অনেকেই বাংলাদেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছে বলেও অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় না বসলে নাকি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম চলতেই থাকবে। তার মানে আলোচনা না করলে তারা এসব চালাতেই থাকবে। তারা এসবে মদদ দিতেই থাকবে, সেটাই কি তারা বলতে চাইছে। এটাই আমার প্রশ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে উলানবাটোরে সম্মেলন চলার সময় ফ্রান্সের নিস শহরে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ হামলার জন্যও তিনি দু:খ প্রকাশ করেন।
তবে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার জন্য বিশ্বের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক নষ্ট হবে না এবং দেশে চলমান উন্নয়ন গতিধারাও ব্যহত হবে না বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কথা বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলার
ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা, পরবর্তীতে তদন্ত বিষয়ে।
বলেন, তদন্তের স্বার্থেই সবকথা প্রকাশ করা হয়না। তদন্তের অনেক ধাপ আছে যেগুলো একটা একটা করে করা হচ্ছে। পরে একসময় এমন কিছু তথ্য বের হবে যে আপনারাই তাজ্জব হয়ে যাবেন যে এরা কিভাবে এসব কাজ করেছে।
আসেম সম্মেলনের সাইড লাইনে বিভিন্ন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় প্রয়োজন অনুসারে সহায়তা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আসেম সম্মেলনে বক্তৃতায়, সকল দেশে ও সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো বেশি করে কৌশলী করে ব্যবহার করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।