মাদক নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরইমধ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু মাদক পাচারকারীকে। বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩২। মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে বাঁচতে এ ধরনের চরম ব্যবস্থাকেই সমর্থন করছেন সাধারণ মানুষ।
‘মাদক নির্মূলে বাংলাদেশ কি ফিলিপিন্সের পথে?’ শিরোনামে চ্যানেল আই অনলাইনে প্রকাশিত একটি খবরে পাঠক মন্তব্যে তাদের সমর্থন স্পষ্ট।
ফজলুল হক নামে একজন লিখেছেন, ধর্ষণ ও মাদকবিরোধী অভিযানে ক্রসফায়ারটা খুবই কার্যকর। মাদক ও ধর্ষকমুক্ত বাংলাদেশ চাই।
রানা নামে আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, সরকার ভালো উদ্যোগ নিয়েছে বটে। অভিযান বন্ধ যেনো না হয়। ছোট মাছ মারতে মারতে বড় মাছ ধরা পড়বে একদিন।
মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ লিখেছেন, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। এটা আরো আগে করা উচিত ছিলো। তবে শুধু গাছের ডাল কাটলে হবে না। মূল উপড়ে ফেলতে হবে, না হয় আবার চারাগাছ হয়ে পূর্ণ গাছে রূপ নেবে, ফলে সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
ইমরান প্রধান লিখেছেন, যার মতোই হোক বা না হোক, মাদক নির্মূল করতেই হবে। তার জন্য যা যা করতে হয় করা উচিৎ।
‘জঙ্গি নিয়ে আপোষ হয়নি, মাদক নিয়েও আপোষ হবে না বাংলাদেশে। তবে হ্যাঁ,অপপ্রয়োগ এর বিরোধিতা করি যাতে ব্যক্তি শত্রুতা বশে নিরীহ মানুষের ক্ষতি না হয়,’ লিখেছেন ইমাম হোসেন।
আব্দুল হান্নানের বক্তব্য হচ্ছে: আমরা সরকারকে আরো কঠিন হতে অনুরোধ করব, ক্রসফায়ার ছাড়া অন্য কোন সমাধান আমরা মানি না।
বিরুদ্ধমতও যে নেই, তা নয়। কেউ কেউ কথা বলছেন ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে। তবে, সংখ্যায় খুব কম। আর কেউ কেউ চুনোপুঁটিদের বদলে রাঘব-বোয়ালদের চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছেন।
মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মাহফুজ লিখেছেন, যারা মাদকের উৎপাদন করে আগে তাদের ক্রসফায়ার করুন, তারপর ছিঁচকেদের ধরুন। মাদকের নামে বিরোধীদের হত্যা বন্ধ করুন।
নুরুল হক নামে একজন বলেছেন, এগুলো জাস্ট আইওয়াশ। সর্ষের ভিতরে ভূত গডফাদার আজীবন লালনপালন করার নাম মাদকবিরোধী অভিযান না। কেয়ারটেকার সরকারের সময় নিউট্রালি অভিযান করলে সমর্থন করা যেতো।
সাম্প্রতিক এক জরিপ থেকে জানা যায়, বর্তমান দেশে মাদকাসক্তর সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ লাখ। কোন কোন সংস্থার মতে ৭০ লাখ, নব্বইয়ের দশকে যার পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ১০ লাখেরও কম।, মাদকসেবীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক, তাদের ৪৩ শতাংশ বেকার। আর ৫০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
কিছুদিন আগেও যারা ফেনসিডিলে আসক্ত ছিল তাদের অধিকাংশই এখন ইয়াবা আসক্ত। ইয়াবা আসক্তরা নানান ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তার মধ্যে কিডনি, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ মাদক ব্যবসায়ী প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা করে।