মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা রক্ষায় যারা রক্ত দিয়েছে তাদের ত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস মুখে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস- ২০২০ উদযাপন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে না; আমরা প্রযুক্তিগত শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়েছি। সারাদেশে আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার ও ইন্টারনেট সার্ভিস দেওয়া থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন সব কিছু ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছি।’
‘‘৭৫ এর পর ২১টি বছর জাতির পিতার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর তা আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আবারও মুছে ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু পারেনি। সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পালন করতে পারছি।’’
বাংলাদেশকে বর্তমান সরকার আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসাবে বাঙালিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার সঙ্গে প্রযুক্তিগত জ্ঞান নিয়ে সারাবিশ্বে একটা সম্মানিত জাতি হিসাবে গড়ে তুলে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’
শেখ হাসিনা সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাকে কেউ এখন দারিদ্র্য, দুর্যোগপূর্ণ ও ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত দেশ বলতে পারবে না। বাংলাদেশের একটি মানুষও যেন গৃহহারা না থাকে। যারা গৃহহীন তাদের আমরা ঘর করে দেবো। প্রত্যেক মানুষের একটা ঠিকানা হবে।’
ভাষা আন্দোলনে যারা রক্ত দিয়েছৈ তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না জানয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের জন্য রক্ত দিয়ে যারা রক্তের অক্ষরে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল, আর যাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে। সেই ত্যাগ কখনো বৃথা যায় না, আত্মত্যাগ বৃথা যায় না। বৃথা যেতে আমরা দেব না।’
‘‘এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, মুজিববর্ষ সফল, সার্থকভাবে আমরা উদযাপন করবো।’’
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় উঠে আসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের আত্মত্যাগের কথা।
১৯৪৮ সালে ১১ মার্চ ভাষা দিবসের আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন শেখ মুজিব। গোয়েন্দাদের গোপন নথিতেও পাওয়া যায় ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর গোপন তৎপরতার খবর।