মেন্ডিসকে স্টাম্পিং করে মুশফিক এমন উদযাপন করলেন, যা খুব একটা তাকে করতে দেখা যায় না। যে ক্ষ্রিপতায় অধিনায়ক স্টাম্প ভাঙলেন তাও সাধারণত তাকে করতে দেখা যায় না। অনেক দিন পর এমন ‘ক্ষমতা’ দেখিয়ে মুশফিক হয়তো একটু অন্যরকম উদযাপনে মেতেছিলেন। কিংবা অন্য একটা কারণ থাকতে পারে। উইকেটের পেছনে ফেরার আনন্দ। সেই আনন্দ উদযাপনের দিনে অধিনায়ক দেখলেন শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রানে দিন শেষ করতে।
শততম টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে বাংলাদেশি বোলাররা শুরু থেকে লঙ্কানদের চেপে ধরে। ৭০ রানে চার উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ-মিরাজরা। মিডলঅর্ডারে দিনেশ চান্দিমাল দাঁড়িয়ে না গেলে দিনটি আরো ভালো যেত বাংলাদেশের। হেরাথকে (১৮*) নিয়ে দিন শেষ করার সময় চান্দিমালের সংগ্রহ ৮৬*। তিনি কী করেছেন এই রান তা বোঝাতে পারছে না। ২১০ বল খেলে শুভাশিস, মিরাজদের ক্লান্ত বানানোর কাজটি মূলত তিনিই করেছেন।
মোস্তাফিজের হাত ধরে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। অনেক বাইরের বলে শট খেলতে যেয়ে দিমুথ করুনারত্নে (৭) গালিতে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন।
এরপর মিরাজের দারুণ এক ডেলিভারিতে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন কুশল মেন্ডিস (৫)। তৃতীয় সাফল্যটিও এসেছে মিরাজের হাত ধরে। এই তরুণ স্পিনারের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে সৌম্যর তালুবন্দী হন থারাঙ্গা (১১)। আসিলা গুনারত্নেকে (১৩) এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে স্বাগতিকদের আরো চেপে ধরেন শুভাশিস রায়।
৭০ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা লঙ্কানদের আলো দেখাতে থাকেন চান্দিমাল ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুজনে ৬৬ রান যোগ করেন। চান্দিমাল ও ডি সিলভা জুটি মারাত্মক হয়ে ওঠার আগেই ধনঞ্জয়াকে আউট করে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের ৪৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিলভাকে বোল্ড করেন তাইজুল। ৫৪ বলে ৩৪ রান স্বাগতিক ব্যাটসম্যানের।
পরে ইনিংসের ৩৯ ওভারের প্রথম বলেই চান্দিমালের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদন তোলে বাংলাদেশ। সাকিবের করা ওই বলে আম্পায়ারও সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিউতে শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট বাঁচাতে সক্ষম হন চান্দিমাল।
চান্দিমাল এরপর ডিকেওয়াল্লার সঙ্গে জুটি গড়েন। দুজনে ৪৪ রান তোলেন। এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। রাউন্ড দ্য উইকেটে যান লেগ সাইডে ৬ জনকে রেখে। স্টাম্পের বল রিভার্স সুইপ করে অফ সাইডে খেলতে যান নিরোশান ডিকেওয়াল্লা। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল স্টাম্প খেয়ে নেয়। এরপর পেরেরাকে (৯) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মোস্তাফিজ। বাইরের বলে মারতে যেয়ে ব্যাটের কানায় লাগান। বল যায় স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্যর হাতে।
মোস্তাফিজ ১৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। সমানসংখ্যক ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৭ রানের বিনিময়ে এক উইকেট নিয়েছেন শুভাশিস রায়। মিরাজও ১৫ ওভার করেছেন। ৫৮ রান দিয়ে ২ উইকেট তার। তাইজুল করেছেন ১৪ ওভার। ১ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৩৪ রান। সবচেয়ে বেশি হাত ঘুরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ২০.১ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে এক উইকেট তার। মোসাদ্দেক ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে উইকেট পাননি।