মার্কসবাদের প্রবক্তা কার্ল মার্কসের জন্মদিন আজ। ১৯৯ বছর আগে ১৮১৮ সালের ৫ মে তৎকালীন প্রাশিয়ার ত্রিয়ের শহরে জন্মগ্রহণ করেন কালজয়ী মার্কসবাদের এই প্রবক্তা।
মার্কসরা ছিলেন সমৃদ্ধশালী এবং সংস্কৃতিবান। তার বাবা হার্শেল মার্কস পেশায় ছিলেন একজন আইনজীবী।
কার্ল মার্ক্স ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতেই পড়াশোনা করেন। বাল্যপাঠ শেষে তিনি ত্রিয়ার জিমনেসিয়ামে এ ভর্তি হন, ১৭ বছর বয়সে সেখান থেকে স্নাতক হন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব বন-এ আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।
বন এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন, দর্শন এবং ইতিহাসের পাঠ সমাপ্ত করে মার্কস যোগ দেন রাইনল্যান্ডের ইউযারডিকাল যুবকদের দ্বারা পরিচালিত ‘রাইন অঞ্চলের সংবাদপত্র’ নামক পত্রিকায়। ১৮৪২ সালের অক্টোবর মাসে তিনি এর সম্পাদক হন। তখনই প্রকাশ পেতে থাকে তার ক্ষুরধার লেখনীর প্রতিভা।
১৮৪৩ সালের ১৯-এ জুন জেনির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন কার্ল মার্কস।
এঙ্গেলসের সাথে মিলে মার্কস গভীর ভাবে ধ্রুপদী জার্মান দর্শন, চিরায়ত অর্থশাস্ত্র এবং ফরাসি সমাজতন্ত্রের মূল নীতিগুলো অধ্যয়ন করেন এবং গড়ে তোলেন বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক মতবাদ, যা পরবর্তী সময় মার্কসবাদ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৪৮-এ প্রকাশিত ‘কমিউনিস্ট ইস্তেহার’ ছাড়াও মার্কস বহু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ১৮৪৪ সালে মার্কস রচনা করেন ‘অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক খসড়া’। ঐ বছর ব্রুনো বাওয়ার-এর মতামতের সমালোচনা করে তার প্রবন্ধ ‘ইহুদী প্রশ্ন প্রসঙ্গে’ প্রকাশিত হয়।
তার পরের বছর (১৮৪৫) তিনি লেখেন ফয়েরবাখ-এর উপর তার বিখ্যাত থিসিস। সেই বছরই এঙ্গেলস-এর সাথে মিলে রচনা করেন ‘পবিত্র পরিবার’ এবং ‘জার্মান মতাদর্শ’ নামে দুটো বই।
১৮৪৭-এ প্রুধোর ‘দরিদ্রের দর্শন’ নামক ইস্তেহারের সমালোচনা করে মার্কস রচনা করেন ‘দর্শনের দারিদ্র’। ঐ একই বছর প্রকাশিত হয় তার ‘মজুরি শ্রম ও পুঁজি’ পুস্তিকা। ১৮৫২-তে মার্কস লেখেন ‘লুই বোনাপার্টের আঠারোই ব্রুমিয়ের’। তার ধ্রুপদী গ্রন্থ দাস ক্যাপিটাল বা পুঁজি। মূলত এই বইটি বিশ্ব ইতিহাসের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলো। গোটা বিশ্ব বদলে যায় তার ধ্রুপদী অর্থনৈতিক দর্শনের কল্যাণে। ১৯১৭ রাশিয়ায় সালের প্রথম সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ছিলো তার আদর্শ রাষ্ট্র কাঠামোর স্বপ্ন্।
মার্কস এবং এঙ্গেলস-এর যৌথ সংগৃহীত রচনাবলীর সংখ্যা মোট ৫০। বিশ্বখ্যাত মতাদর্শের এই প্রবক্তা ১৮৮৩ সালের ১৪ই মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।