সম্প্রতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এবার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে ২০ জনকে ১২ কোটি ২০ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে খোরশেদ আলম খসরুর প্রযোজনায় নির্মাতা এস এ হক অলিক ‘গলুই’ চলচ্চিত্রের জন্য পেতে যাচ্ছেন ৬০ লাখ টাকা।
এই ছবিটি নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী প্রযোজক খসরু ও নির্মাতা অলিক জুটি। ছবিটি নিয়ে কথা বলতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা এসেছিলেন চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘তারকা কথন’ এ। রাজু আলীমের প্রযোজনা ও সাফি আহমেদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত নির্মিতব্য ‘গলুই’ নিয়ে কথা বললেন তারা।
‘গলুই’কে অনুদানের জন্য নির্বাচিত করায় উচ্ছ্বসিত প্রযোজক খসরু। জানালেন, এ বছর জমাকৃত ২৩৮টি চিত্রনাট্য’র মধ্যে ২০টি চলচ্চিত্রকে অনুদানের জন্য নির্বাচিত করেছে তথ্যমন্ত্রণালয়। তারমধ্যে ‘গলুই’ একটি। স্বভাবতই এমন অনুদানে আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই চিত্রনাট্য বাছাই কমিটিকে।
খসরু বলেন, আমার সব সিনেমা-ই পুরোপুরি কমার্শিয়াল, একেবারে অ্যাকশন-রোমান্স, গানে ভরপুর। ভিন্ন ধারার গল্প নিয়ে প্রথমবার কাজ করতে যাচ্ছি, তার মানে ‘গলুই’ কিন্তু আর্টফিল্ম নয়- গ্রামীণ পটভূমির গল্প ‘গলুই’।
কমার্শিয়াল ছবির প্রযোজক হয়েও কেন সরকারি অনুদান নিতে হলো, কারণ জানিয়ে খসরু বলেন: এ পর্যন্ত আমি ২৩টি সিনেমা প্রযোজনা করেছি। আমার শেষ ছবিটি পরিচালনা করেছেন অলিক। এতোদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছি, আমি চিন্তা করলাম যে একটা চিত্রনাট্য আমরা সরকারি অনুদানের জন্য জমা দিতেই পারি। নিজের টাকা দিয়ে অনেক সিনেমা বানিয়েছি, অনেক লসও করেছি। আবারও ছবি বানাতে চাই, সরকারের কাছ থেকে যদি কিছু পাওয়া যায়- তাহলে নিজে কিছু লগ্নি করে একটি ভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে চাই। সেই ভাবনা থেকেই অলিকের সাথে গল্প শেয়ার করি, এবং অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য তৈরী করি।
‘গলুই’ এর চিত্রনাট্য প্রস্তুত নিয়ে নির্মাতা এস এ হক অলিক বলেন, খসরু ভাইয়ের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিলো অন্য ধরনের গল্প নিয়ে সিনেমা করার। কারণ উনি ক্যারিয়ারে প্রচুর কমার্শিয়াল ছবি বানিয়েছেন। উনার লাস্ট ছবি আমারই পরিচালনায় নির্মিত ‘আরো ভালোবাসতো তোমায়’। সেসময় উনি দুই লাইনে একটা গল্পের কথা আমাকে বললেন, যা আমার মাথায় ঢুকে। এরপর খসরু ভাইয়ের সাথে কথা বলে এবং আমাদের কয়েকজন সিনিয়রদের সাথে কথা বলে অনুদানের জন্য ‘গলুই’ গল্পটা দাঁড় করাই।
অলিক বলেন, গলুই মানে নৌকার গলুই। নৌকার সাথে জীবন, জীবনের সাথে সম্পর্ক, পরিবার, রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা মিলিয়ে একটা জীবন ধারা। এরমধ্যে প্রেম, টানাপোড়েন, বন্ধন- পুরো ছবিটার মধ্যে থাকবে। সেজন্যই ছবির নাম গলুই। কারণ নৌকার একপ্রান্তে থাকে মাঝির আসন, অন্যপ্রান্তের নিশানা যদি ঠিক না থাকে- তাহলে নৌকা কিন্তু এদিক সেদিক করবে। জীবনটাও কিন্তু তাই। পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে একজন যদি একটু এদিক সেদিক হয়, তাহলে সংসারটা কিন্তু ঠিকঠাক চলে না। এদিক সেদিক হয়ে যায়। গলুইয়ের ফিলোসোফিক্যাল জায়গাটা কিন্তু এটা।
অনুদানের গল্প ‘গলুই’তে কারা থাকছেন, এমন প্রশ্নে খসরু বলেন, অনুদান প্রস্তাবনায়তো সম্ভাব্য অভিনেতাদের নাম দিতে হয়, আমরাও দিয়েছি। এখন যেহেতু অনুদান পেয়েছি, তাদের সাথে আগে কথা বলবো। হয়তো অনেকের সিডিউল নাও পেতে পারি, সেক্ষেত্রে আমরা আরো বিস্তারিত ভেবে সিদ্ধান্ত নিবো। অনুদানের ছবি নির্মাণে কোথাও কোনো ছাড় দিবো না। সরকার আমাদের উপর আস্থা রেখেছে, আমরা সেই আস্থার মূল্য দিতে চাই।