২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ভালো, বাস্তবে তা সম্ভব নয় বলে মনে করে সিপিডি। স্বল্পোন্নত দেশের জন্য জাতিসংঘের বৈশ্বিক বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বাংলাদেশের পক্ষে ২০২৪’এর আগে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকেও বের হওয়া সম্ভব নয়। আর বের হতে হলে প্রয়োজন কৃষিখাতসহ গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন।
দুনিয়াজুড়ে এক যোগে ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সহযোগী সংস্থা আঙ্কটাড।
সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক বিবেচনায় কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি হলেও তা স্বল্পোন্নত দেশের তকমা মুছে ফেলতে যথেষ্ট নয় বলে জানায় সিপিডি। বলে, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরুতে হলে মানবসম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষি অবকাঠামোসহ গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন জরুরি।
সিপিডির ফেলো ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কেউ কেউ বলছেন যে ২০২১ সালের মধ্যে তারা উচ্চ মধ্য আয়ের দেশে যাবেন। এখন আমাদের মাথাপিছু আয় ১১০০ ডলার। উচ্চ মধ্য আয়ের দেশ হতে হলে দরকার ৪১২৫ ডলার। চার-পাঁচ বছরে মাথাপিছু আয় চারগুণ বাড়াতে নি:সন্দেহে বড় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের দরকার পড়বে। অনেকে বিবেচনা না করে নানান ধরনের পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন, যেসব রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ঠিক আছে কিন্তু অর্থনৈতিক বিবেচ্য হিসেবে খুব যুৎসই না।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপাল ও ভুটানের উন্নতি চোখের পরার মতো উল্লেখ করে সিপিডি জানায়, কৃষি জমির উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা হলেও কৃষি শ্রম উৎপাদনে পিছিয়ে বাংলাদেশ, আছে ২০তম স্থানে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেন, পরিসংখ্যানের দিকে যতটা মনোযোগ দিচ্ছি। ততটা মনোযোগ নীতি বা পরিকল্পনায় নেই। গ্রামীন অর্থনীতির বৈপ্লবিক উন্নয়ন ব্যাতিরেকে পৃথিবীর কোনো দেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে উচ্চ মধ্য আয়ের দেশে যেতে পারেনি। বাংলাদেশও পারবে না।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকায় শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা ছাড়াও বৈদেশিক সহযোগিতাসহ নানান সুবিধা ভোগ করে বাংলাদেশ। তালিকা থেকে বের হয়ে গেলে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। তবে সুবিধা পাবে বাণিজ্যিক ঋণের মতো নানা ইস্যুতে।