চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘মকিম-ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি’

সর্বোচ্চ আদালতে আপিল খারিজ এবং রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পরই স্বাভাবিকভাবে মকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন: এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মকিম ও ঝড়ুর আপিলটি শুনানির জন্য আসার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন: আমি খোজ নিয়ে দেখলাম আসামি মকিম ও ঝড়ু জেলখানা থেকে যে আপিল করেছিলেন সেটি ছিল জেল আপিল। তিনজন বিচারপতি শুনানি করে সে জেল আপিল ১৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে রায়ের মাধ্যমে খারিজ করে দেন। কিন্তু আসামিরা আর একটি (নিয়মিত) আপিল করেন, যেটি গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ছিল। যেহেতু এই আপিলটি আলাদাভাবে করা হয়েছে একসাথে ট্যাগ করা হয়নি, এই কারণে এটি রয়ে গেছে।

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন: আসামি পক্ষের আইনজীবীদের উচিত ছিল দুটি আপিল একসঙ্গে শুনানি করা বা আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে আসা। যেহেতু তারা আদালতের দৃষ্টিতে আনেননি, তাই যে জেল আপিলটি এসেছিল তা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হয়ে (ডিসমিসড) খারিজ হয়েছে। বিচার তো হয়ে গিয়েছে। আদালতে তাদের আইনজীবীরা শুনানি করেছেন। আদালত সব কিছু শুনে বিচার করে (জেল আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন। পরে আসামিরা রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করলে সেটিও খারিজ (ডিসমিসড) হয়েছে। আপিল এবং প্রাণ ভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার পরেই স্বাভাবিকভাবে আসামিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মো. মনোয়ার হোসেন খুন হন। ওই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই মো. অহিমউদ্দিন বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল তিনজনকে  মৃত্যুদণ্ড, দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর আসামিদের খালাস দিয়ে রায় দেন চুয়াডাঙ্গার আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: আবুল কালাম আজাদ, মোকিম ও ঝড়ু। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল ও আসামিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে পরে মোকিম ও ঝড়ু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল ও জেল আপিল করেন। সম্প্রতি মোকিম ও ঝড়ুর আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। যেটি গতকালের কার্যতালিকার ১১ নম্বরে শুনানির জন্য ছিল।

এ বিষয়ে গতকাল আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমের কাছে দাবী করেন যে, ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।’ পরবর্তীতে এই সংবাদ প্রকাশ হলে আলোচনার ঝড় ওঠে।

একপর্যায়ে যশোরের কারা কর্তৃপক্ষ গতকাল রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, সব আইন মেনেই ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কারাগারে মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।