মানহানির মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তবে এই সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন না।
আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন: জামিন যোগ্য মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন বাতিল করা অত্যন্ত লজ্জাও দুঃখজনক। তিনি সমিতির সাবেক সভাপতি। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু জামিনযোগ্য মামলায় তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যা খুব দুঃখজনক। আমরা মনে করি ফরমায়েশি আদেশের কারণে এটি করা হয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন আরো বলেন: আমারা অবিলম্বে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন বাতিলকারী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব তোফাজ্জল হোসেনের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাবেক সভাপতি আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সহ সাবেক ও বর্তমান নেত্বীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘একাত্তর জার্নাল’-এ রাজনৈতিক সংবাদের বিশ্লেষণ চলছিল। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন উপস্থাপিকা মিথিলা ফারজানা। এতে অতিথি ছিলেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ও সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত। আলোচনায় স্টুডিওর বাইরে থেকে যুক্ত হন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
আলোচনার ফাঁকে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কিনা?
এর জবাবে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’ এরপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াসহ সব জায়গায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
এরপর গত ২১ অক্টোবর মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি। পরদিন ২২ অক্টোবর মইনুল হোসেন গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান মইনুল হোসেন।
সর্বশেষ আপিল বিভাগের এক নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মানহানির এ মামলায় আত্মসমর্পণ করে গত ৩ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদন করেন মইনুল হোসেন। তবে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরই তাকে কারাগারে নেওয়া হয়।