চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘ভয়ে’ রেইনট্রি থেকে চাকরি ছাড়ছেন অনেকেই

বনানীর যে হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সেই রেইনট্রি হোটেল থেকে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হোটেলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদনান হারুন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিটি গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।

আদনান হারুন বলেন,  আমার প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে, আমার পরিবার, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও পরিবার রয়েছে। আজ আমাদের পরিবারের সবাই সামাজিকভাবে ধাপে ধাপে লাঞ্ছিত হচ্ছে। ছোট হচ্ছে। তাদের এখানে কি অপরাধ? অনেকেই ভয়ে ও মানসিকভাবে আহত হয়ে প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে দিয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিটির তথ্যানুসন্ধান কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে তিনি বলেন: তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল হোটেলে কোন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না; আমরা বলেছি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। এখানে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে পুলিশ বের করুক।

“আমরা যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের যোগ্য শাস্তি চাই। আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ, আমরা পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছি। আমরাও চাই অপরাধীদের সবচেয়ে বেশি শাস্তি হোক”।

এরআগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার পর হোটেলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আদনান হারুন মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ে ওই ঘটনায় কমিশন গঠিত একটি তদন্ত কমিটির কাছে ব্যাখা দিতে পৌঁছান।

আদনান ছাড়াও কমিশনে উপস্থিত হওয়া অন্যরা হলেন হোটেলটির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফ্রাঙ্ক ফরগেট, তার স্ত্রী এবং হোটেলের এক্সিকিউটিভ ইন্টারনাল অপারেশন (ইআইও) ফারজান আরা রিমি।

এর কিছুক্ষণ পরই হোটেলটির দুই প্রধান কর্মকর্তাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

গত ২৮ মার্চ বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে বন্ধুর মাধ্যমে এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী। এরপর অভিযুক্তরা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে।

যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, তারা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদ, ই-মেকার্স বাংলাদেশের মালিক নাঈম আশরাফ ওরফে আব্দুল হালিম, রেগনাম গ্রুপের পরিচালক সাদমান সাকিফ, সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনকে আসামী করে একজন ছাত্রী মামলা করেন।

১১ মে প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৫  মে রাতে র‌্যাব এবং ডিবির পৃথক অভিযানে গ্রেফতার হয়  গাড়ি চালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত আলী।

১৭ মে রাতে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে গ্রেফতার হয় ধর্ষণ মামলার দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে আব্দুল হালিম।

প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি উপেক্ষা করে ঘটনার একমাসের বেশি দিন পর ওই দুই তরুণী ৪ মে বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে যান। তবে থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদেরকে হয়রানী করে বলে অভিযোগ ওঠার ৪৮ ঘণ্টা পর ৬ মে ওই অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে।

ছবি: সাকিব উল ইসলাম