কক্সবাজার থেকে: গত কালের মতো আজও সকাল থেকেই শুরু সাগর যোদ্ধাদের দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শণ। বিশাল সব ঢেউ, প্রবল গর্জন আর তীব্রভাবে ছুটে আসা অন্তহীন পানির ভীতিকর পরিবেশের যে অদম্য আকর্ষণ, তা যেনো আরও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় বাংলাদেশের সার্ফারদের সুকৌশলী দক্ষতায়।
নীল মেঘ আর প্রচন্ড বাতাস, দুর্বার বেগে ৬-৭ ফিট উচ্চতার একেকটি ঢেউ যেমন পরাবাস্তব অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়, তাকে ঠিক যেনো আরও স্বপ্নময় অনুভূতি এনে দেয় ফাহাদ হোসেন, মান্নান আর রিফা আক্তাররা। এই তিনজনই এবারের ব্র্যাক চিকেন জাতীয় সাফিং টুর্নামেন্টের বিজয়ের মুকুটধারী।
জুনিয়র, পুরুষ এবং নারী এই তিন গ্রুপে এবারে মহাসমারোহে আয়োজিত সার্ফিং প্রতিযোগিতার ফাইনালে প্রথম স্থানে অধিকারীদের দেয়া হয়েছে ক্রেস্ট এবং আর্থিক পুরস্কার। এছাড়াও সমাপণী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননা দিয়ে অকুতোভয় প্রথম বাংলাদেশী নারী সার্ফার নাসিমা আক্তারকে দেয়া হয়েছে বিশেষ সম্মাননা।
নারী বিভাগে প্রথম রিফা ১৫ হাজার, দ্বিতীয় শবে মেহরাজ ১০ হাজার এবং আয়েশাকে ৫০০০ টাকার চেক দেয়া হয়। জুনিয়র গ্রুপে শীর্ষ মান্নান, সেলিম ও সাগর নারীদের অনুপাতেই নম্বর পান। তবে অধিক দক্ষ পুরষ গ্রুপে প্রথম ফাহাদ, দ্বিতীয় কামাল ও তৃতীয় নাসির হোসেনকে দেয়া হয় ২০ হাজার, ১৫ হাজার এবং ১০ হাজার। এছাড়া ফাইনালে অংশ প্রতি গ্রুপের বাকি তিনজনও পেয়েছেন ক্রেস্ট এবং উপহারের ব্যাগ।
সমাপণী অনুষ্ঠানটিকে অলঙ্কৃত করেন বাংলাদেশ সার্ফিং ফেডারেশনের সভাপতি এমপি ফিরোজ রশীদ এমপি এবং কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হাজি মুহাম্মদ ইলিয়াস এবং আরও গণমান্য ব্যক্তিবর্গ। শুধু টুর্নামেন্ট চলাকালীনই নয় এরপরেও যেন অমিত প্রতিভার অধিকারী এই সকল হতদরিদ্র সার্ফারদের কথা কেউ ভুলে না যায়, তাদের আর্থিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে এমন অঙ্গীকার ছিলো অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথীদের।
সকাল সাড়ে আটটা থেকে ভীতিকর সর্বগ্রাসী প্রতিরূপ নিয়ে ভয়ঙ্কর ঢেউয়ের মাঝে সার্ফাররা যেভাবে অভাবনীয় কৌশল দেখিয়েছেন তাতে আগ্রাসী লোনা পানিকে তাদের অনুগতই মনে হয়েছে। যেনো সমাজের বঞ্চিত এই গোষ্ঠিকে সাগরও আপন করে নিয়েছে অসীম ভালোবাসায়।
সাড়ে ১২ টার দিকে প্রতিযোগিতার সমাপ্তির পর দ্বিতীয় টুর্নামেন্টটির সকল ধরণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় দুপুর আড়াইটায়। অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব পরিসরে সার্ফিংকে তুলে ধরার অঙ্গীকার ছিলো সংশ্লিষ্টদের।