কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই অনলাইন বা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট বা মূসকের টাকা জমা দেয়া যাবে। সেজন্য ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এরফলে অনলাইনে ভ্যাটের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ই-পেমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প এনবিআরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে প্রণীত মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ অনলাইন ভিত্তিক। এটির সফল বাস্তবায়নের জন্য ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের মাধ্যমে ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভাস) চালুর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ১৬টি মডিউলের মধ্যে ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন, রিটার্ন ও টেক্সপেয়ার একাউন্ট মডিউলটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মডেলগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন মডিউলটিতে ইতোমধ্যে এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২০ জন করদাতা অনলাইনে বিআইএন গ্রহণ করেছেন। এছাড়া ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে অনলাইনভিত্তিক রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ৪২ হাজারেরও বেশি অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন। সব নিবন্ধিত তালিকাভুক্ত ব্যক্তি যাতে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারেন, সেজন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
ই-পেমেন্ট মডিউলটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাট সংক্রান্ত সব কর (ভ্যাট, টার্নওভার কর, সম্পূরক শুল্ক, জরিমানা, সুদ ইত্যাদি) ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন। বর্তমানে এইচএসবিসি, প্রাইম ও মিডল্যান্ড ব্যাংকের মাধ্যমে ই-পেমেন্ট কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
জানা গেছে, চালানে ভ্যাট জমা দিতে ব্যাংকে নগদ টাকা নিয়ে যেতে হয়। চেক ও পে-অর্ডার জমা দিলে ট্রেজারি চালান পেতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লেগে যায়। এছাড়া নগদ টাকা জমা দেয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও থাকে। ট্রেজারি চালানে ভ্যাট জমায় বাড়তি চার্জও দিতে হয়। এতে করদাতারা ভ্যাট অফিসে সময়মতো চালান জমা দিতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে ট্রেজারি চালানের নম্বর জালিয়াতি করে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনাও ঘটে।
এসব ঝামেলা থেকে করদাতাদের মুক্তি দিতে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ভ্যাটের আওতায় নিবন্ধিত ব্যক্তি নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে সরাসরি ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কসহ যে কোনো প্রদেয় কর সহজে, ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় এবং কম সময়ে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বাংলাদেশের মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আবদুল ফাত্তাহ, ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, এনবিআরের সিস্টেম ম্যানেজার মো. শফিকুর রহমান প্রমুখ।