চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভ্যাকসিন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ রাশিয়ার অস্বীকার

রাশিয়ান হ্যাকাররা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণা তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল- যুক্তরাজ্যের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত।

বিবিসির অ্যান্ড্রু মার শোতে রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কেলিন বলেন, ‘এসব গল্পে আমি মোটেও বিশ্বাস করি না। এসবের কোনো অর্থ নেই।’

যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ রয়েছে- এমন বক্তব্যও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

এই সপ্তাহের শুরুতে পররাষ্ট্র সচিব ডমিনিক র‌াব দাবি করেন, রুশরা অবৈধভাবে পাওয়া তথ্যের মাধ্যমে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল।

কেলিন বলেন, এই বিষয়টিকে হস্তক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করার কোনও পয়েন্ট দেখতে পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, আমরা মোটেও হস্তক্ষেপ করি না। হস্তক্ষেপের কোনও দিক দেখতে পাই না, কারণ এই দেশ পরিচালনার দায়িত্বে কনজারভেটিভ পার্টি বা লেবার পার্টিই থাকুক না কেন; আমরা সম্পর্ক নিশ্চিত করতে এবং আরও ভাল করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ইউক্রেনের গণতন্ত্রে রাশিয়ার বিস্তৃত হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে করা একটি প্রতিবেদন যুক্তরাজ্যের সংসদের গোয়েন্দা ও সুরক্ষা কমিটির প্রকাশ করার কথা রয়েছে। তার কয়েকদিন আগে এই সাক্ষাত্কারটি সামনে এলো।

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির তথ্য চুরির বিষয়ে সত্য জানতে চাইলে কেলিন সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, আমি ব্রিটিশ মিডিয়া থেকেই তাদের সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

এসব ভ্যাকসিনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানলে যে রাশিয়ার জন্য সুবিধা হবে এমন কথাও অস্বীকার করেন কেলিন। বলেন, রাশিয়ার ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা আর-ফার্ম এরই মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছে অস্ট্রফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে তা কার্যকর করার জন্য।

কেলিন এও বলেন, রাশিয়ার কর্মকর্তারা দেশটির সাম্প্রতিক সাংবিধানিক গণভোট নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন; সেখানে যুক্তরাজ্য অঞ্চল থেকে উদ্ভূত বেশ কয়েকটি সাইবার-আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

দুই সপ্তাহ আগে, রাশিয়া বিভিন্ন সংবিধানে পরিবর্তন আনার জন্য ভোট সম্পন্ন হয়েছে। সেসব পরিবর্তনের মধ্যে সম-লিঙ্গের বিবাহ নিষিদ্ধকরণ এবং রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা সম্ভব করার বিধি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কেলিন জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া সাইবার-হামলায় জড়িত থাকার জন্য ‘যুক্তরাজ্যকে রাষ্ট্র হিসাবে অভিযুক্ত’ করছে না এবং এ সম্পর্কে আর কোনো বিস্তারিত তথ্যও তিনি দেননি।

গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণার তথ্য হাতিয়ে নিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রাশিয়ার হ্যাকাররা হানা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগ।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এনসিএসসি) বলছে, এই হ্যাকাররা ‘প্রায় নিশ্চিতভাবেই’ রাশিয়ার গোয়েন্দা সেবা বিভাগের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য চুরির চেষ্টা করতে ম্যালওয়ার ব্যবহার করছে হ্যাকাররা।

করোনা ভ্যাকসিন গবেষণার তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় জড়িত হ্যাকারদের এই গ্রুপ এপিটি-২৯ নামে পরিচিত। এছাড়া এই গ্রুপটি ‘দ্য ডিউক’ এবং ‘কজি বিয়ার’ নামেও পরিচত।

হ্যাকাররা ঝুঁকিপূর্ণ কম্পিউটার সিস্টেমের অ্যাক্সেস পেতে সফ্টওয়্যার ত্রুটিগুলো কাজে লাগিয়েছে এবং ‘ওয়েলমেস’ ও ‘ওয়েলমেইল, নামের দুটি ম্যালওয়ার ব্যবহার করে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার বলছে, ২০২০ সাল জুড়েই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের সংস্থাগুলোকে টার্গেট করেছে এপিটি২৯। কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন তৈরি ও পরীক্ষা সম্পর্কিত তথ্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি চুরির উদ্দেশ্যেই তারা এটি করেছে।