করোনা ভ্যাকসিন আমদানির ক্ষেত্রে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী যেন বাণিজ্য সুবিধা নিতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারের কাছে যথাযথ পদক্ষেপের প্রত্যাশা করেছেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক।
সোমবার গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এমন প্রত্যাশার কথা জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন: কোভিড-১৯ সংক্রমণের অতিমারিতে আক্রান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন নিরাপদ এবং অর্থনীতি সচল রাখার জটিল সমস্যা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের আস্থা যুগিয়েছে। সংক্রমণ রোধে টিকাদানের ব্যবস্থাপনা এবং তার বাস্তবায়ন সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করে ভ্যাকসিন সংগ্রহের যে ব্যবস্থা করেছিলেন তা ভারতজুড়ে অভাবিত রোগ সংক্রমণের কারণে বিপর্যস্ত ও বন্ধ হয়ে যায়।
আরও বলা হয়: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীন থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু করে। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন সিনোফার্মা এবং স্পুটনিক দেশে উৎপাদনের জন্য সরকারীভাবে ফলপ্রসূ আলোচনা শুরু হয়। এর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম দেশগুলোর জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে অধিকার শিথিল করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
বিবৃতিতে আরও বলা ছিলো: আমরা সরকারের এইসব পদক্ষেপের সঙ্গে সহমত পোষণ করে জরুরি ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি। সেই সাথে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভ্যাকসিন-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি, ভ্যাকসিন আমদানির আলোচনা ও সিদ্ধান্ত এবং জনগণকে টিকাদানের সমগ্র দায়-দায়িত্ব যেহেতু সরকার পালন করছে, তাই ভ্যাকসিন আমদানিতে কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডব্লিউটিও এবং অন্যান্য ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বুদ্ধিবৃত্তিক সুরক্ষা শিথিলের যে দাবি তুলেছেন তা বিশ্বমানবের সার্বজনীন অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা এই দাবির পক্ষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে সক্ষম দেশীয় ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানসমূহ দ্বারা ভ্যাকসিন উৎপাদনের দ্রুত বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের জন্য করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই। তাই দেশজ উৎপাদন বাস্তবায়নে যুদ্ধকালীন জরুরি পরিস্থিতির ন্যায় সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, সেটা সবার কাম্য।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আবেদ খান, অধ্যাপক আবদুস সেলিম, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, ডা. আমজাদ হোসেন, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, ডা. রশিদ এ মাহবুব, ডা. কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক এ বি এম ফারুক, শাহরিয়ার কবির, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।