অতীতের মতো নিয়ম মেনেই ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মন্তব্য করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোটের আগে সাধারণত সমঝোতা হয়। সে রকমই চেষ্টা করা হবে। যদি সমঝোতা ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। তবে, ভোটে উল্টাপাল্টা কেউ আসলে তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
সম্প্রতি সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে বুধবার বিকালে গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘সমঝোতায় সফল না হলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোট হবে। তবে ভোটের মাধ্যমে হওয়ারও একটা ঝামেলা আছে। তারা ইয়াং ছেলেপুলে, ভোটের মধ্যে অনেক কিছুই হতে পারে। তারা প্রভাবিত হতে পারে। তবে আমরা দেখবো যদি ভোটের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব এসেছে কিনা। না এলে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা জানেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে একটা উপযুক্ত বয়সসীমা রয়েছে, তাদের ছাত্র হতে হবে। এদের মধ্য থেকেই নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এরই মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে এ বিষয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। জাতিসংঘের সিকিউরিটি কাউন্সিল চায় তারা তাদের ঘরে ফিরে যাক।
‘এ বিষয়ে তারা আন্তরিক। আমাদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা সেখানে গেছে। আমরা ১১ লাখেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছি। এ উদ্যেগের তারা প্রশংসা করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী তার সফরগুলোর বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
এসময় কমনওয়েলথ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক অর্জনের কথা তিনি তুলে ধরেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্বনেতাদের প্রশংসা পাচ্ছে বাংলাদেশ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
সমুদ্র গবেষণায় সহায়তা এবং বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি’র ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সফরের বিস্তারিত তুলে ধরার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ১৬ এপ্রিল সৌদি আরবে সৌদি নেতৃত্বাধীন মুসলিম দেশগুলোর জোটের যৌথ সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সামরিক মহড়া শেষে শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে যান যুক্তরাজ্যে।
যুক্তরাজ্যে সাবেক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্বাধীন দেশগুলোর মোর্চা কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন শেখ হাসিনা। এ সময় দুই বার তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কথা বলেছেন। এই দেশ থেকে তিনি দেশে ফেরেন ২৩ এপ্রিল।
দেশে ফেরার তিন দিন পরেই প্রধানমন্ত্রী যান অস্ট্রেলিয়া। গ্লোবাল সামিট অব উইমেনে যোগ দিতে তিনি ঢাকা ছাড়েন ২৭ এপ্রিল। ৩০ এপ্রিল দেশে ফেরেন তিনি।
এই সম্মেলনে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখায় শেখ হাসিনাকে দেয়া হয় গ্লোবাল উইম্যান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড।
সবশেষ ইতালি ও ভ্যাটিকান সফর শেষে ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।