বেদখল হতে চলেছে রাজধানীর শ্যামলী খেলার মাঠ। মাঠের প্রায় ২০ কাঠা জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে কাঁচাবাজার। অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠলেও প্রভাবশালীদের দাপটে দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না দু’ লাখেরও বেশি মানুষের খেলার মাঠটি।
ঢাকা শহরে খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। যেগুলো রয়েছে সেগুলোও হারাতে বসেছে প্রভাবশালীদের প্রভাবে। এমনই দখলদারিত্বের শিকার রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠ। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে শ্যামলী, মোহাম্মদপুর ও আশপাশের দু’ লাখের বেশি মানুষের খেলার মাঠটির বিশাল অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজার।
কিশোররা জানালেন, বাজারের কারণে জিমের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। অভিভাবকরা মনে করেন পরিবেশ রক্ষার জন্য এই বাজারটি সরানো প্রয়োজন।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অপারেশন ডাল-ভাত কর্মসূচির আওতায় মাঠের একটি অংশজুড়ে বিডিআর শপ তৈরি করা হয়েছিলো। বিডিআর বাজারটি ছেড়ে শ্যামলী ক্লাবকে বুঝিয়ে দিলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় উচ্ছেদ করা যায়নি কাঁচাবাজার। দেড়শ’ মত দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলারও অভিযোগ রয়েছে।
দোকানদাররা বলছেন এটা উন্মুক্ত বাজার, ফখরুদ্দিন বসিয়ে গেছে। এখানে তারা ফ্রি দোকান করছেন না; বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়।
অপরদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরা বলছেন, মাঠ মাঠের জায়গায় রয়েছে আর বাজার রয়েছে বাজারের জায়গায়। তাদের অভিযোগ সঠিক নয়।
নানা চেষ্টা করেও খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে পারছে না মাঠ পরিচালনা কমিটি। উচ্ছেদ করতে গিয়ে উল্টো মামলার শিকার হতে হয়েছে তাদের।
শ্যামলী ক্লাব মাঠের সভাপতি সৈয়দ মো:শামসুল কাউনাইন জানান, সব জায়গা থেকে বিডিআরের বাজার উঠে গেছে কিন্তু আমাদের এখানে কতিপয় লোক বাজার থেকে তোলা খাওয়ার জন্য এ বাজার জিয়িয়ে রাখে।
বাজার উচ্ছেদে অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান বললেন, আমি ভোটের রাজনীতি করি, সত্য কথা বললে সবই অবৈধ। ভোটারদের ধরে রাখতে মাঠ দখলমুক্ত করতে পারছি না । তবে আমি চাই অবৈধ যারাই হোক যে জায়গাতে হোক সেটা উচ্ছেদ হোক।
প্রভাবশালী আর সুবিধাবাদীদের সুবিধা দিতে গিয়ে খেলার মাঠটি যাতে হারিয়ে না যায় সেই দাবি মাঠ সংশ্লিষ্টদের।
ঢাকার শহরে যখন মাঠের সমস্যা শিশুদের খেলার জায়গা কমে যাচ্ছে; তখন শ্যামলীর এই মাঠটিকে রক্ষায় চারিদিকে দেওয়া হয়েছিল দেয়াল, তবে সেখানেও প্রভাবশালীদের আক্রমণ মাঠের জায়গা দখল করে হয়েছে মাছের বাজার।
তাই সংশ্লিষ্টদের দাবী অবিলম্বে এই মাছের বাজারটিকে সরিয়ে এখানে শিশুদের খেলার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।