ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বানিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় কালিচরণ সাহার শত কোটির টাকার জমি বিক্রি করেছে একটি প্রতারক চক্র। অথচ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না জমির মালিক কালিচরণ।
প্রতারক চক্রটি অধিক চাঁন বর্মণ নামের এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে জমির মালিক কালিচরণ সাহা সাজিয়ে প্রায় ১৭ একর জমি দখল করেছে এবং সাত একর জমিও বিক্রি করে দিয়েছে।
বেনামি কোম্পানি খুলে চক্রের দুই সদস্য অবশিষ্ট ১০ একর জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখে ২০ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করে ফেঁসে গেছে।
গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর বেইলি রোড থেকে ভুয়া এনআইডি, জমির কাগজপত্র, স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রসহ প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আবুল কাসেম ও জমির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম ইউনিট।
ডিবির সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) জসিম উদ্দিন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, অধিক চাঁন বর্মণের ছবি দিয়ে কালিচরণ সাহার নামে ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করা হয়। অধিক চাঁন বর্মণকে এক লাখ টাকার চুক্তিতে কালিচরণ সাহা সাজিয়ে জমি আত্মসাৎ করেছে প্রতারক চক্রটি। ভূমি অফিস থেকে কাগজপত্র ঠিক করে ১৭ একর জমির মধ্যে সাত একর জমি মোটা অংকের টাকায় ইতিমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছে প্রতারকরা।
এডিসি জসিম জানান, বাকি ১০ একর জমির কাগজপত্র বন্ধক (মর্টগেজ) রেখে ব্যাংক ঋণের আবেদন করা হয়। ঋণ দেয়ার আগে অনুসন্ধানে নেমে ব্যাংকের কর্মকর্তারা কিছু অসঙ্গতি পান। পরে ডিবির অনুসন্ধানে প্রতারক চক্রের ভয়াবহ প্রতারণার চিত্র ধরা পড়ে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি দুইজন এ চক্রে জড়িত আরো ৯ জনের নাম বলেছে। জিজ্ঞাসাবাদে কাসেম জানায়, স্থানীয় এক এসিল্যান্ড ভূমি অফিস থেকে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে, বিনিময়ে তিনি নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।
ডিবি জানায়, এ চক্রের সঙ্গে মোশারফ হোসেন, ফয়সাল, মনির, কাজী মঞ্জুরুল ইসলাম, সুশান্ত কুমার সাহা ও সুমন্ত বর্মণ জড়িত।
এডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, জমির আসল মালিক কালিচরণ সাহার সন্ধান পাওয়া গেছে। কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর গ্রামের ১৭ একর জমি বিক্রির বিষয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা কিছুই জানে না।
এই চক্রের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী ও ভূমি অফিসের অনেকে জড়িত। তাদের অনেকের নাম পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই করে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।