শেষ বলের ছক্কায় ম্যাচ হার ক্রিকেটে নতুন নয়। তবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল বলে আক্ষেপটা একটু বেশিই। ম্যাচটা ভারতের বিপক্ষে হওয়ায় আক্ষেপ বেড়েছে বহুগুণ। টাইগার-সমর্থকদের মনে জমেছে হতাশার পাহাড়, ঘটছে আবেগের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ। রাস্তার মোড়, চায়ের দোকান, যেখানেই মানুষের জটলা; আলোচনায় ১৮ মার্চের ফাইনাল। বিসিবিপাড়ায়ও একইরকম আলোচনা সঙ্গে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের আয়রন গেটের দায়িত্বে থাকা আলী হোসেন এই প্রতিবেদককে দেখে একাডেমি ভবনের দিকে এগোতে এগোতে বলছিলেন, রুবেল কেন বাউন্স দিল না? তাকে পাল্টা প্রশ্ন, বাউন্স দিলে জিতত বাংলাদেশ? শুনে চুপ করে কিছু একটা ভাবলেন অল্পক্ষণ। পরে বললেন, ক্রিকেট খেলায় কে নিশ্চয়তা দিতে পারবে! তবে অনেকের মুখে শুনেছি ওই সময় বাউন্স দিলে ভাল হত। বলতে বলতে মাথা নিচু করে মাটিতে চোখ রাখলেন।
প্রিমিয়ার লিগ খেলা এক ক্রিকেটারের গাড়ির ড্রাইভার পাশে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন, স্লো বল করলে ভাল হত। জোরের উপর বল করায় টাইমিং সহজ হয়ে গেছে। কাজের ফাঁকে ফাইনালের হার নিয়ে এমন আলোচনা হোম অব ক্রিকেটের মাঠকর্মীদের মাঝেও।
কলম্বো থেকে দলের সঙ্গে দেশে ফিরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, খেলোয়াড়দের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। কষ্ট মাপার যন্ত্র থাকলে দ্বিতীয় স্থানটা দখলের দাবি জানাতে পারতেন স্টেডিয়াম-মাঠ রক্ষণাবেক্ষেণে থাকা কর্মীরাও!
বিসিবির নিজস্ব আলোকচিত্রী রতন গোমেজ বুধবার জিমে এলেন খেলোয়াড়দের ছবি তুলতে। ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে রেখে বলে গেলেন কী করলে কী হতে পারত। তার মতে, রুবেল বাউন্সার ট্রাই করলে ট্রফিটা হতে পারত বাংলাদেশের। আক্ষেপের চূড়ান্ত প্রদর্শনী ফুটল তার চাহনিতে!
প্রেমাদাসায় পুরো নিধাস ট্রফি দেখেছেন বাউন্ডারি সীমানার পাশের ছাউনিতে বসে। দেখেছেন ফাইনালে লঙ্কান দর্শকদের ভারতীয় বনে যাওয়াও, বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের গগনবিদারী চিৎকার! রতনের আক্ষেপ, ‘ম্যাচটা আমরা জিতলে সবাই বোল্ড হয়ে যেত!
ফাইনাল হারের হতাশা খেলোয়াড়রাও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। বাংলাদেশ দলের পেসার তাসকিন আহমেদ জিমে এসে কিছুটা সময় কাটালেন প্রিমিয়ার লিগে খেলা ক্রিকেটারদের সঙ্গে। সেখানেও প্রেমাদাসার ম্যাচ ঘিরে আলোচনা। বেশিক্ষণ থাকা হল না জিমে। কোলাহল বাড়ার আগেই নিলেন বাসায় ফেরার প্রস্তুতি। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এসেছিলেন বিসিবি কার্যালয়ে। চোখ-মুখে রাজ্যের অন্ধকার। সাকিবের সেই চেহারাই যেন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।