চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য: জনগণকে রক্ষা করবে কে?

টানা তিনদিন অঘোষিত ধর্মঘট ডেকে বাস মালিকরা নিজেদের চাহিদা মতো ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছেন। সেই বাড়তি ভাড়া কার্যকরের প্রথম দিনেই সারাদেশে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের চিত্র উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। যাত্রীদের অভিযোগ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) প্রায় ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিলেও পরিবহন মালিকরা তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন। এমনকি সেই বাড়তি ভাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশও ছাড়িয়ে গেছে!

ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের এমন চিত্র শুধু ডিজেল চালিত গণপরিবহনে নয়, লেগুনাসহ (হিউম্যান হলার) যেসব গণপরিবহন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে (সিএনজিতে) চলে; তারাও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। অথচ বিআরটিএ বারবার বলছে, সিএনজি, অকটেন ও পেট্রলচালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে নতুন ভাড়া প্রযোজ্য হবে না।

বিআরটিএ শুধু মুখে বলেই নিজের কাজ শেষ করেছে। তাদের নির্দেশ বাস মালিকরা মানলেন, কি মানলেন না- সেই তদারকিতে তারা নেই। এমনকি কোন গাড়ি ডিজেলে চেলে, কোন গাড়ি সিএনজিতে চলে- তাও আলাদাভাবে চিহ্নিত করে দেয়নি তারা। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে পরিবহন মালিকরা। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে বলা হচ্ছে, ‘তাদের গাড়ি তেলে চলে’। দিনের পর দিন সিএনজিতে চলা গাড়ি তেলের হয়ে গেল! কি তুঘলকি কাণ্ড!

এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষায় বিআরটিএ বা সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে জনস্বার্থে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। বাড়তি ভাড়া আদায় চলছেই।

আমাদের প্রশ্ন, যাত্রীদের কাছ থেকে গায়ের জোরে এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে তার প্রতিকারের দায়িত্ব কার? সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কেউ কি নেই? এমনিতেই করোনাসহ নানা কারণে মানুষের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে আবার তেলের দাম বাড়ানোয় নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় ভাড়া নৈরাজ্যে মানুষকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, যারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সঙ্গে জড়িত এবং সিএনজি চালিত হয়েও বেশি ভাড়া আদায় করছে- বিআরটিএ কে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণকে ভাড়া নৈরাজ্য থেকে মুক্তি দিতে হবে।