চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রয়েছে উপমহাদেশের সিনেমা হলগুলো। যার মধ্যে সিঙ্গেল স্ক্রিনের সিনেমা হলগুলোর বেশকিছু আর না খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে এই তালিকায় আছে কলকাতার বহু নামিদামি সিনেমা হল!
এ বিষয়ে প্রেক্ষাগৃহগুলোকে বাঁচানোর তাগিদ অনুভব করছেন টলিউডের কিছু হিট পরিচালক। এ বিষয়ে নির্মাতারা সম্প্রতি তাদের মতামত জানিয়েছেন ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে। প্রায় সবার অভিমত প্রায় একই। তারা মনে করছেন, ভালো কনটেন্ট আর সরকারি সহায়তাই এখন বাঁচাতে পারে এই এক পর্দার (সিঙ্গেল স্ক্রিন) সিনেমা হলগুলোকে।
রাজ চক্রবর্তী
এক পর্দার সিনেমা হলগুলোর অবস্থা অনেক আগে থেকেই খারাপ। উপরন্তু মহামারী করোনা এসে যেন তাতে আরো বাজে প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি থেকে আমরা কবে নাগাদ রক্ষা পাবো কেউই জানি না। তবে এমনটা যদি দীর্ঘ সময় চলতেই থাকে তবে পরিস্থিতি আর হাতের নাগালে থাকবে না। সুতরাং, বিনিয়োগকারীর সবাইকেই বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করে একটি ভালো ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে হবে। নাহলে সার্বিকভাবেই ক্ষতির সম্মুখিন হবে আমাদের চলচ্চিত্র।
রবি কিনাগি
আমার পরিচালিত পরাণ যায় জলিয়া রে, ১০০% লাভ, আওয়ারা -এর মত বেশ কিছু ছবি এই এক পর্দার সিনেমা হলগুলোতেই (সিঙ্গেল স্ক্রিন) সুপারহিট হয়েছিল। অথচ আজ এই করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই সিনেমা হলগুলোই নিঃস্বের পথে। ভাবতে খুব অবাক লাগছে, যেই সিনেমা হলগুলো একসময় হাউজফুল থাকতো সেগুলোকেই আবার জীবিত করার উপায় পাচ্ছি না। সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি বিষয়টির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
রাজিব
‘প্রথমে মানুষের মহামারীর আতঙ্ক কাটাতে হবে। এরপর, এই হলগুলোকে বাঁচাতে স্টেকহোল্ডারদের এগিয়ে আসতে হবে। এক পর্দার হলগুলোর মেরুদণ্ড ছিল আগে ভালো সিনেমা। তবে এখন শুধু মাত্র ভালো কনটেন্ট দিয়েই দর্শক টানা সম্ভব নয়। কেননা সবাই নিজের সুরক্ষার ব্যাপারে সচেতন। তাই আগে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে। এছাড়াও হলগুলো পর্যবেক্ষণ কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ খরচ, কর্পোরেশন কর প্রদান সহ সকল বিষয়ে হল মালিকদের সরকারি অনুদান প্রদান করতে হবে।
হরনাথ চক্রবর্তী
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, সংঘর্ষ, নবাব, সাথী, সঙ্গী সহ আরো একাধিক সিনেমার পরিচালনা আমি করেছি। যেগুলো অধিকাংশই এই এক পর্দার সিনেমা হলগুলোতে ব্লকবাস্টার হিট হয়েছিল। আমি মনে করি, এক পর্দার স্ক্রিন ছাড়া সিনেমা অঙ্গন টিকতে পারবে না। কেননা মাল্টিপ্লেক্স আসার আগে এই এক পর্দার হলগুলোই বেশি চলতো। এমনকি এখনো এই এক পর্দার দর্শক সংখ্যা শেষ হয়ে যায়নি। এক সময় আমাদের সাতশর বেশি এক পর্দার হল ছিল। কিন্তু এখন সেই সংখ্যা কমে ১০০তে চলে এসেছে। চলমান মহামারীর জন্য হলগুলো এখন বন্ধ থাকলেও সেইসব হল মালিকদের ভর্তুকি দিয়ে যেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত এই প্রেক্ষাগৃহগুলি বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথাযথ সহায়তা করা।