কে কে জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন, কখনো কখনো এই খবরের চেয়ে তার সুযোগ না পাওয়াটাই বড় খবর হয়ে ওঠে। স্কোয়াডে থেকে একাদশে জায়গা না হলে তো লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। চায়ের কাপে ওঠে ঝড়। কারণ নামটা যে নাসির হোসেন। বছরের পর বছর ধরে জনপ্রিয়তার চিত্রটা এমনই এই টাইগার তারকাকে ঘিরে। যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই নাসিরই নাকি জানেন না মানুষ কেন তাকে এত ভালোবাসে। সবার ভালোবাসা আর সমর্থন পেয়ে অবশ্য আপ্লুত হন তিনি।
‘মি. ফিনিশার’ খ্যাত অলরাউন্ডার জাতীয় দলে অনিয়মিত হওয়ার পর থেকে সর্বক্ষণই ক্রিকেটপ্রেমীদের আলোচনা-ভালোবাসার কেন্দ্রে থেকেছেন। রোববার কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ঘাম ঝরানোর পর বিসিবির লাউঞ্জে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নাসিরকে বলতে হল সদা অটুট থাকা এই ভালোবাসা নিয়েও।
‘আমি জানি না কেন মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে। এটা মানুষের কাছ থেকে আমার বড় পাওয়া। এ জিনিসটা সবাই পায় না। আমি সে জিনিসটা পেয়েছি। আমি তাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। তারা আমার উপরে যে বিশ্বাস রাখেন, আশা করেন, আমি চেষ্টা করবো সেই বিশ্বাস ও আশাটার প্রতিদান দেয়ার। সেটা করার জন্যই এই অনুশীলন ক্যাম্প, ফিটনেস ক্যাম্প। চেষ্টা করছি জাতীয় দলে ঢোকার জন্য।’
ইতিবাচক আলোচনা যেমন হয়, নাসিরকে নিয়ে নেতিবাচক আলোচনাও কম হয় না। ব্যক্তি নাসির ভালো কি মন্দ, এসব নিয়েও কথা ওঠে বিস্তর। সব সামলে খেলায় শতভাগ মনোযোগ দেওয়া যায় কিনা; সেটিও বড় প্রশ্ন। নাসির জানালেন, জনপ্রিয়তা বা ইতিবাচক-নেতিবাচক কথার প্রভাব কোনভাবেই তার খেলায় পড়ে না।
‘যাদের নাম হয় তাদের বদনামও হয়। এটা সত্য কথা। আলোচনা বলতে, আপনি আমাকে এক চোখে দেখবেন আরেকজন অন্য চোখে দেখবে। আমার চোখ দিয়ে তো আমি সবাইকে এক চোখে দেখতে পারব না। আর ফেসবুক বলেন, পত্রিকা বলেন; সত্যি বলতে আমি পেপার পড়ি না। ফেসবুক থাকা না থাকাও একই কথা। শুধু তো সবার ব্যক্তিগত নিউজ আর নিউজ। আপনি যখন খেলাধুলা করেন তখন এসব নিউজ আপনার মাথায় থাকে না। খেলার বাইরে মাঝে মাঝে আসে কথাগুলো। খেলার মধ্যে এসব জিনিস আসে না।’
আসা-যাওয়ার মাঝে থাকা সময়টায় ওয়ানডে ফরম্যাটে নাসিরের বিকল্প এখন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজের মত তরুণরা। নির্বাচকরাও নাসিরের চেয়ে এই দুই ক্রিকেটারকেই বেশি সক্ষম মনে করছেন। হয়তো তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই ফিরে আসতে হবে নাসিরকে। নাসির অবশ্য কাউকেই প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেন না। দলে ফিরতে কেবল ভালো পারফর্ম করে যাওয়াটাই মানদণ্ড মনে করেন তিনি।
‘আমি মনে করি না আমার কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী আছে কিংবা জাতীয় দলে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী। এখন তারা ভালো খেলছে। দোয়া করি যেন জাতীয় দলে যারা আছে তারা আরও ভালো খেলে। চাইলেও তো আর সবাই জাতীয় দলে নিয়মিত ভালো খেলে না। তবে জাতীয় দলের জায়গা সবার জন্য এবং সবসময় ওপেন থাকে। ভালো খেললে সুযোগ অবশ্যই আসবে।’