ভালোবাসার তালায় ভরে গেছে পুরো ব্রিজ। এমন ভালোবাসার ভার আর বহন করতে পারছে না ব্রিজটি। প্যারিসকে বলা হয় ভালোবাসার শহর। এই শহরে এসে লাভ-লক ব্রিজে তালা মেরে নিজেদের ভালোবাসাকে চিরস্থায়ী করার স্বপ্ন বুনেনি এমন মানুষের খোঁজ পাওয়া দুষ্কর।
কিন্তু বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসা নিশ্চিত করে এখন নিজেই অনিরাপদ হয়ে উঠেছে লাভ লক সেতুটি। তাই এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পন্ট ডেজ আর্টস। তারা সেইন নদীর উপর অবস্থিত এই সেতুটির সবগুলো রেলিং ঢেকে দেবে কাঁচের প্যানেলে। যেন আর কেউ এখানে তালা লাগাতে না পারে। তবে তার আগে ফাঁকা জায়গাগুলো ফানকো তিউনিসিয়ান ইএল সিডের মতো বিখ্যাত সব শিল্পীর চিত্রকর্ম দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে।
প্যারিসের সেইন নদীর উপর অবস্থিত সেতুটি এখন সবার কাছে লাভ-লক ব্রিজ নামেই বেশি পরিচিত। তালা, বাইকের তালা, হ্যান্ডকাপ কী নেই এই তালার ব্রিজে। সবাই তালায় নিজেদের নাম লিখে এই ব্রিজে আটকে দেয়। তারপর চাবিটা ফেলে দেয় সেইন নদীতে। তালা লাগানোর প্রথাটা প্রথম শুরু করেছিলো পন্ট ডেজ আর্টস। পরে ব্রিজে আগত সব ট্যুরিস্টই তালা লাগানো শুরু করে।
এখন ব্রিজে ঝোলানো সবগুলো তালা খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অবশ্য কাজও শুরু করে দিয়েছে প্যারিস সিটি হলের কর্মীরা।
সিটি হলের মুখপাত্র বারবারা অ্যাটলান বলেন, ‘সেতুর জন্য কাজটা ধ্বংসাত্মক। প্রথমত আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা উচিত।’
সিটি হল পরিসংখ্যান করে দেখেছে সেতুটির প্রতি তিন মিটার রেলিং প্যানেলে-এ যে তালা ধারণ করছে তার ওজন দাঁড়ায় ৫০০ কিলোগ্রাম। এমন ১১২ টি প্যানেল রয়েছে পুরো সেতুটিতে। সুতরাং পরিমাণটা আন্দাজ করুন! ফলে সেতুর ঠিক যতোটা ভার বহন করার কথা, এখন ওজন তার চেয়ে চারগুণ বেশি।
সেতুর নিচ দিয়ে চলাচলকারী ফেরিগুলোই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শহরের কিছু কর্মকর্তা প্রায়ই সেতুটির বড় বড় পিলারের চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে এবং যে এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ সেখান থেকে তালা কেটে ফেলে। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আবার সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যায়।
এখন থেকে সিটি হলের কর্মীরা অন্যান্য যেসব ব্রিজকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করবে সেখানেই তালা পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবে বলেও জানিয়েছে কর্মকর্তারা।