‘বাজরঙ্গি ভাইজান’ নামে খ্যাতি পাওয়া জামাল ইবনে মূসা ভালো নেই। পাচারকারীদের হাত থেকে ভারতীয় এক শিশুকে উদ্ধার করে দিল্লীতে তার বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দিয়ে আসার পর দেশে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি। মূসা বলেছেন, ভালো কাজ করতে গিয়ে সব কিছু হারাতে হয়েছে তাকে।
বলিউডের সিনেমা ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ দর্শকের হৃদয়-মন-বিবেক নাড়িয়েছিল। বাস্তবেও ঘটেছে এমন। ছয় বছর আগে দিল্লী থেকে পাচারের শিকার হয়ে বাংলাদেশের বরগুণায় চলে এসেছিলো পাঁচ বছরের সনু।
বেশ কাঠখড় পেরিয়ে সনুকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন বাংলাদেশের জামাল ইবনে মূসা। ভারতের সব গণমাধ্যমে এসেছে ওই সংবাদ। ভারতে তিনি উপাধি পেয়েছেন ‘বাজরঙ্গি ভাইজান’ হিসেবে।
দিল্লীতে সনুকে পৌঁছাতে গিয়ে নানা ভাবে হেনস্তা, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। জেল খেটেছেন ১ মাস ২৪ দিন। একমাত্র সম্বল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিও হারিয়েছেন। এখনো মামলা রয়েছে একাধিক।
‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ মূসা বলেন, সনুকে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে বিভিন্ন হামলা ও মামলার শিকার হয়েছি। নিজের শেষ সম্বল চাকুরিটাও হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়া মূসা বলেন, বর্তমানে কোর্টে এবং থানায় আমার মামলা রয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমার আকুতি যাতে আমি মামলা থেকে মুক্ত হতে পারি।
এবং সরকার যদি একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে একমাত্র ছেলে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব। যোগ্যতা অনুসারে যদি আমার সুইপারের চাকুরিও হয় তাহলে কোনো আপত্তি নেই যদি সরকার যদি এই সাহায্যটুকু আমার জন্য করে।
মানুষের জন্য উপকারের মানসিকতা মূসার প্রথম নয়। ২০০৭ সালে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন এক বাবা। সেই বিচারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন মূসা। শেষ পর্যন্ত বিচারও পেয়েছেন। ৬৪ বছরের সাজা হয় বাবা সেন্টু তালুকদারের।
মূসা আরো বলেন, নিজে যতো হয়রানির শিকারই হন না কেনো, অন্যের জন্য কিছু করার যে যে আনন্দ তার কাছে সবকিছু তুচ্ছ।
এরইমধ্যে বরগুণায় ভারতীয় শিশু সনুকে ভারতে ফিরিয়ে দেয়ার মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়েছে। সেখানে মূসার ভূমিকাকে ‘নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন আদালত।