দেশে করোনারভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে শুরু হওয়া ভার্চুয়াল আদালত গত ৪০ কার্যদিবসে লক্ষাধিক আবেদনে অর্ধলক্ষাধিক জামিন মঞ্জুর করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৪০ কার্যদিবসে সারাদেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরিচালিত অধস্তন আদালতে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৭টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। যেখানে জামিনপ্রাপ্ত শিশু রয়েছেম ৬৫১ জন। এছাড়াও ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এরইমধ্যে বেশ কিছু জামিন আদেশ হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক আইনজীবী ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সোচ্চার হন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘ফুল কোর্ট সভা’ থেকে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারির জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সেই প্রেক্ষাপটে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে আদালতে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে “আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ- ২০২০” নামে গত ৯ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন (বর্তমানে এইটি আইন) রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ।
এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে গত ১০ মে ভার্চুয়াল আদালত সংক্রান্ত কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়। যেখানে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ দেয়া হয়। এছাড়া আইনজীবীদের জন্য প্রকাশ করা হয় ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’।
এরই ধারাবাহিতায় করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক সাধারণ ছুটি ও অবকাশকালীন ছুটি বা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত, হাইকোর্ট ও সারাদেশের অধস্তন আদালতগুলো ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়।
এরপর গত ১১ মে দেশের ইতিহাসে প্রথম ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট একাধিক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশনা দেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আসামি স্বচক্ষে দেখে রিমান্ড শুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ।