ভারত-চীন সীমান্ত লাদাখে আবারও সংঘর্ষে ৩ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নতুন করে ভারত-চীনের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হলো।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, সোমবার রাতে গলওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনার হামলায় ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর একজন কর্নেল এবং দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘর্ষে চীনেরও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দু’পক্ষের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। তার পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সেনাবানিহীর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বলা হয়, গলওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা প্রশমন প্রক্রিয়ার চলাকালীনই গতকাল রাতে সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ভারতীয় সেনার এক অফিসার এবং দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। দু’পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করছেন।
মঙ্গলবার একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষের সিনিয়র সামরিক প্রতিনিধিরা বর্তমানে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করছেন।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং পূর্ব লাদাখের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে তিন সেনাবাহিনীর প্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ভারত এবং চীনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। সম্প্রতি সেই সীমান্ত এলাকাতেই দুই দেশের সেনাদের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
গত প্রায় ৪৫ বছর পর চীন সীমান্তের এই ঘটনায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরা নিহত হয়েছেন। এর আগে ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশের তুলুং লাতে এমন একটি সংঘর্ষে ৪ ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন।
তবে সংবাদ সংস্থা এএফপি বরাতে এনডিটিভি জানায়, বেইজিং পাল্টা অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় সেনা সদস্যরাই সীমান্ত পেরিয়ে ‘চীনা সেনাদের আক্রমণ’ করে।
এই বিষয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার দুই বার ভারতীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে এবং চীনা সেনাদের উস্কানি দেয় ও আক্রমণ করে, এরপরেই উভয় পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর আগে গত ৯ মে একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চীনা সেনারা। ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভারত-চীন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চীনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তখনই জানানো হয়, মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে নাকি পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তারা।
তারপর দুই দেশের পক্ষ থেকে সমাধানের লক্ষ্যে বৈঠক হয়।