চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভারত কি একলা হয়ে পড়ছে?

চীনে সোমবার শেষ হলো ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবোর) প্রকল্পের দু’দিন ব্যাপী সম্মেলন। কিন্তু হাজার কোটি ডলারের বহু-মহাদেশীয় এই প্রকল্পের অংশ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চীনের আমন্ত্রণ মুখের ওপর ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত।

‘সার্বভৌমত্বের’ ইস্যু দেখিয়ে প্রকল্পটি থেকে নিজেকে নেয়ার সিদ্ধান্ত পারিপার্শ্বিক দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল, এবং সার্বিকভাবে পুরো এশিয়ায় ভারতকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

১৪-১৫ মে বেইজিংয়ের সীমান্তবর্তী ইয়াংকুই লেকে আয়োজিত ওবোর সম্মেলনে ভারত আর তার ‘অধীনস্থ’ বলে পরিচিত ভুটান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশই অংশ নেয়।

মালদ্বীপ ২০১৪ সালে ওবোর প্রকল্পে যোগ দেয়। বাংলাদেশ যোগ দেয় গত বছর। ২০১০ সালে হাম্বানটোটা বন্দর নির্মাণের পর শ্রীলঙ্কা এমনিই প্রকল্পটির অংশ হয়ে ওঠে। পাকিস্তানও একইভাবে

ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পে সর্বশেষ যোগ দিলো নেপাল

চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপেক) নির্মাণের পর এ প্রকল্পের অংশ হয়। সর্বশেষ চলতি মাসে যোগ দেয় নেপাল।

শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, এশিয়া ও এর বাইরের বিভিন্ন দেশ, এমনকি জাপান ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো, যারা চীনের আধিপত্যবাদিতার চরম সমালোচনা করে, তারাও ওবোর ফোরামের সম্মেলনে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। এমনকি চীনের কট্টর বিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সরকারের প্রতিনিধিদলও ছিল সেখানে। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন হোয়াইট হাউজ উপদেষ্টা ম্যাট পটিংগার।

অথচ চীনের বারবার আহ্বানের পরও সম্মেলনে যায়নি ভারত। চীন সরকার বহুবার ভারতকে বলেছে, রাজনৈতিক বিরোধিতাগুলোকে পাশে সরিয়ে ওবোরে যোগ দিতে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সার্বভৌমত্বসহ এ ধরণের ইস্যুগুলোকে পেছনে ফেলে দক্ষিণ এশিয়া এবং সর্বোপরি পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতকে এগিয়ে আসতে বলেছে চীন। এবারের ওবোর সম্মেলনে যোগ দেয়ার আহ্বানটিও ছিল ওই রকমই। কিন্তু ভারত রাজি হচ্ছে না।

চীনের ইনস্টিটিউট অব সাউথ, সাউথ ইস্ট এশিয়ান অ্যান্ড ওশানিক স্টাডিজের পরিচালক প্রফেসর হু শিশেং নেপালি পত্রিকা কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেন, ভারত ইতোমধ্যে বিবিআইএন এবং বিমস্টেক-

বারবার আহ্বানের পরও ওবোর প্রকল্পে যোগ দিচ্ছে না ভারত

এর মতো সংঘগুলোতে গভীরভাবে জড়িত। সুতরাং ওবোরে যুক্ত হওয়াটা তার জন্য কঠিন কিছু না।

‘নয়াদিল্লি মানুক বা না মানুক, এক সময় স্বাভাবিকভাবেই তারা ওবোর প্রকল্পের অংশ হয়ে উঠবে,’ বলেন প্রফেসর হু।

তবে চীনের এই গবেষক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, পাকিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোকে ওবোর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ভারত চাপ দিতে পারে। আর তখন দেশগুলো হয়তো ভারতের সেই চাপ বা ‘জ্বালাতন’ সহ্য করে টিকে থাকতে পারবে না।

ভারত নিজে একা হয়ে থাকছে বলে অন্যদেরকেও তার দলে টানতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রফেসর হুসহ অন্য বিশেষজ্ঞরা।