করোনাভাইরাস বিস্তার ঠেকাতে পুরো ভারত ২১ দিনের লকডাউনের আওতায় রয়েছে। এতে দেশজুড়ে বন্ধ রয়েছে ট্রেন, বাসসহ সবরকম পরিবহন। শুধুমাত্র গ্রামে ফিরতে, দিল্লি থেকে হেঁটেই ১৫০ কিলোমিটার অথবা কেউ ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছেন দিনমজুর কিংবা পরিযায়ী শ্রমিক। যাদের বেশিরভাগই উত্তরপ্রদেশের।
দিল্লি থেকে কিংবা পড়শি রাজ্য থেকে হেঁটেই ফিরছেন তারা। এই দৃশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের স্মৃতি।
তবে হঠাৎ এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ভারতের বেশিরভাগ মহাসড়কে মানুষের উপচে পড়া ভিড়।মঙ্গলবার দেশটিতে লকডাউনের ঘোষণার পর থেকেই কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক।
এনডিটিভি জানায়, আচমকা গোটা দেশে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করায় কাজ-খাদ্য-আশ্রয় হারিয়ে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছিলেন এই শ্রমিকরা। বেশিরভাগই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা।তবে এদের নিজ গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০০০টি বাসের ব্যবস্থা করেছিল ভারতের সরকার।
এই খবর শোনার পরই ভিড় উপচে পড়ে ভারতের আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিড়ের ভিডিও ভাইরাল হতেই সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে সরব হন আমজনতা। বাধ্য হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারদের বরখাস্ত করে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির লড়াইয়ে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে দুই সিনিয়র আইএএস অফিসারকে বরখাস্ত করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আরও দুই অফিসারকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অফিসাররা কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় ঘোষিত লকডাউনের সময় জনগণের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
পরিবহন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এবং অর্থ দপ্তরের প্রধান সচিবকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও ভূমি দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এবং দিল্লির সিলমপুরের মহকুমা শাসককে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এরই সাথে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই নিজের গ্রাম বা শহরে ফিরে গেছেন তাদের ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া বর্ডার সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলোকে, যাতে আর কোনো শ্রমিক ঢুকতে না পারে। যারা যেখানে আটকে পড়েছে সেখানেই তাদের জন্য খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৭১ জন। মারা গেছেন ২৯ জন।