দিল্লিতে রোহিত শর্মার দলকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। অপরাজিত ৬০ রান করে মুশফিকুর রহিম জয় তুলেই মাঠ ছেড়েছেন। ভারতের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টিতে এটি প্রথম জয় টাইগারদের।
এই জয়ে ঘুরেফিরে আসছে ৩ বলে ২ রানের সমীকরণ মেলাতে না পারা বেঙ্গালোরের সেই স্মৃতি। সেই জুটি দিল্লি জয় করে দেখাল। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে সেদিন পারেননি মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। রোববার আর নির্ঘুম রাত আসতে দিলেন না দুজনে। নবম ম্যাচে এসে ছোট ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে মিলল জয়।
গত কয়েক বছরে ক্রিকেট দুনিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্যতম বড় নাম হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। এই দুই দল মুখোমুখি হওয়া মানেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে শেষ মুহূর্তে গিয়ে হতাশ দলের নামের জায়গায় অধিকাংশ সময়ই থেকে যাচ্ছিল বাংলাদেশের নাম। বিশেষ করে টি-টুয়েন্টিতে। এবার সেই ধারা ভেঙেছে।
সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল দলে নেই। তবে প্রথম ম্যাচে অন্তত তাদের অভাব টের পেতে দিলেন না বাংলাদেশের অন্য খেলোয়াড়রা। ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং, সব বিভাগেই প্রত্যেকে নিজের সেরাটা উপহার দিয়ে বাংলাদেশকে টি-টুয়েন্টিতে দারুণ জয় এনে দিলেন।
মারকাটারি টি-টুয়েন্টির আমলে ১৪৯ রান আহামরি কোনো টার্গেট নয়। তবে দিল্লির স্টেডিয়ামে সময়ের সঙ্গে বল স্লো হলে আশার সঙ্গে শিশির ভেজা মাঠের হিসাবও রাখতে হয়েছে। জয়ের জন্য শুরুটা যেমন হওয়া দরকার ইনিংসের দ্বিতীয় বলে চার হাঁকিয়ে তেমনটাই করেছিলেন লিটন দাস।
কিন্তু চিকচিকে আলোটাকে বাড়াতে পারেননি লিটন (৭)। দিপক চাহারের অফস্টাম্পের বাইরের বল দোমনা শট খেলে পয়েন্টে লোকেশ রাহুলের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৬ রান তুলে শুরুর ক্ষতটা অবশ্য ঢেকে দেন নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার।
অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখার মতোই এগোচ্ছিলেন নাঈম। দেখেশুনে খেলে ২৬টা রানও করে ফেলেন। কিন্তু রানের চাকা একটু বেশি ঘোরাতে গিয়ে যুজবেন্দ্র চাহালকে উড়িয়ে খেলতে গিয়েই বিধিবাম। তার আকাশ তোলা বলটা হাতছাড়া করেননি ‘গব্বর সিংহ’ শেখর ধাওয়ান।
নাঈমের উইকেট নিয়েও বাংলাদেশের খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি ভারত। হতে দেননি সৌম্য-মুশফিক। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬০ তুলে বাংলাদেশ জয়ের পথেই নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারের শেষ বলে প্রায় ঘুমন্ত দিল্লিকে জাগিয়ে তোলেন খলিল আহমেদ। তার স্লো ডেলিভারিতে উইকেট এলোমেলো হয়ে যায়। ৩৫ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন সৌম্য।
মুশফিক-সৌম্যর ধীর ব্যাটিংয়ের ফাঁক দিয়ে ব্যবধান বেড়ে যায় বল-রানের। এরমধ্যে অবশ্য সহজ ক্যাচ ছেড়ে মুশফিককে ‘জীবন’ দেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। সেই বল হাত ফসকে চারও হয়ে যায়। শেষ ১৮ বলে বাংলাদেশের দরকার হয় ৩৭ রানে। ১৮তম ওভারে ১৫ নিয়ে আশা জাগান মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। শেষ ১২ বলে দরকার ২২ রান। ১৯তম ওভারের চারটি চার সহ ১৮ রান নেন মুশফিক। শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ বলে ৪ রান। তিন বল হাতে রেখে ১৫৪ রান করে বাংলাদেশ।
৪৩ বলে আট চার ও এক ছক্কায় ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। ৭ বলে সমান এক চার ও এক ছয়ে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। দুদলের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ ৭ নভেম্বর, রাজকোটে।