কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্যের জেরে ভারতে কানাডার হাইকমিশনারকে তলব করে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
শুক্রবার মন্ত্রণালয় বলেছে, ট্রুডোর মন্তব্য ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে, এতে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
গত সোমবার শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের ৫৫১তম জন্মদিন উপলক্ষে কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের এক অনলাইন অনুষ্ঠানে অংশ নেন ট্রুডো। সেখানেই ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলন নিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে তিনি বলেন, আমরা সবাই তাদের পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে চিন্তিত।
ভারতীয়রা অনেকেই যেমন ট্রুডোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন, তেমনি এদেশে নেটিজেনদের একটা বড় অংশ আবার তাকে ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে দূরে থাকার’ পরামর্শ দিয়েছেন।
অনেকে আবার মনে করছেন, ভারতে আন্দোলনরত কৃষকদের বেশির ভাগই যেহেতু পাঞ্জাবের শিখ, তাই কানাডায় শিখ বংশোদ্ভূতদের সমর্থন পেতেই ট্রুডো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ওই বিবৃতি দিয়েছেন।
উদ্দেশ্য যাই হোক, ট্রুডোর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতীয়রা এখন যে কার্যত দুভাগে বিভক্ত তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
ভালো করে না জেনেশুনেই এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে কানাডিয়ান নেতৃত্বের বিরত থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
ট্রুডোর মতো একই মন্তব্য করেছিলেন কানাডার কনজারভেটিভ পার্টির এক নেতাও। এই ধরনের মন্তব্যের কারণে কানাডায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে কট্টরপন্থিরা বিক্ষোভ করেছে এবং এ পরিস্থিতিতে ভারত সরকার সেখানকার কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
আমরা আশা করব, কানাডা সরকার যে কোনও চরমপন্থি বিক্ষোভ বা আন্দোলন থেকে সেখানকার ভারতীয় দূতবাস ও এর কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
তবে কানাডার দূতাবাস এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি।
ভারতে গত সপ্তাহ থেকেই চলছে কৃষক বিক্ষোভ। এ বছর কার্যকর হওয়া ৩ কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডসহ কয়েকটি রাজ্যের কৃষকরা ‘দিল্লি চল’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে ভারত সরকার কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।