সিলেট থেকে: বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী বোলার হিসেবে টেস্টে দশ উইকেট শিকারের রেকর্ডটি এখনও এনামুল হক জুনিয়রের দখলে। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের সিরিজে ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন এ বাঁহাতি স্পিনার। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ খেলা সিরিজেও করেছেন দুর্দান্ত বোলিং। অথচ ‘অজানা কারণে’ ৫ বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে সিলেটের এ ক্রিকেটার।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টের আনুষ্ঠানিকতায় আমন্ত্রিত হয়ে শনিবার রাজিন সালেহর সঙ্গে আসেন এনামুলও। ১৫ টেস্টে ৪৪ উইকেট পাওয়া এ স্পিনারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে না থাকলে হয়তো থাকতেন মাঠেই। ৩১ বছর বয়সী এনামুল তাই নিজেকে দুর্ভাগাই ভাবেন।
‘ভাগ্যাহত অবশ্যই। কারণ এ বয়সে স্পিনাররা পাকাপোক্ত হয়। এ বয়সে বিশ্বে সবাই কার্যকর ভূমিকা পালন করে দলের জন্য। ৩০-৩২এ এসে বোলিংয়ে ধার বাড়ে স্পিনারদের। আমি এ মুহূর্তে দলের বাইরে, আফসোস আছে। তবে এখনও স্বপ্ন দেখি এ কারণে যে, আমার বয়স তেমন কিছুই হয়নি, কষ্ট করে যাব। যদি পারফরম্যান্স ও ফিটনেস থাকে, নির্বাচকরা যদি চান তাহলে অবশ্যই খেলতে পারব।’
‘স্পিনাররা ৩৮-৪০ বছর পর্যন্ত খেলতে পারে। ভালো পারফরম্যান্স নিয়ে আমি যদি ৩ থেকে ৫ বছর সার্ভিস দিতে পারি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক পাওয়া হবে।’
পারফর্ম করে যাওয়ার পরও বাদ পড়ার আক্ষেপ দূরে সরিয়ে আগামীর কথাই ভাবছেন এনামুল। তার ভাবনার জগতে ভালভাবেই আছে জাতীয় দলে ফেরার ইচ্ছাও।
‘অতীত নিয়ে কথা বলতে চাই না। সামনে এগোতে চাই। ভালো ভালো পারফরম্যান্স দিতে চাই যেন আবার বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারি। এখানেই হয়তবা টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলতে পারব।’
পাঁচ বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে এনামুলের বোলিংয়ের ধার কতটা বেড়েছে সেটা নিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পরিসংখ্যানই কথা বলছে। আব্দুর রাজ্জাকের পর দেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের অপেক্ষায় থাকা এনামুলের (৪৫৩ উইকেট) অভিজ্ঞতাই এখন শক্তি। যা পুঁজি করে ফিরতে চান ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে।
‘অভিজ্ঞতা যোগ হয়েছে এর থেকে বড় কিছু পাওয়ার নেই। টেস্ট ক্রিকেট অভিজ্ঞ মানুষের খেলা। অভিজ্ঞদের মাঝে যা পাবেন নতুনদের মাঝে তা পাবেন না। আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে এটাই আমার বড় শক্তি।’
১৩ বছর আগে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই গড়া কীর্তি নিয়ে এনামুল বললেন, ‘তখন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা নিয়মিত খেলতাম। আমাদের খুব পরিচিত প্রতিপক্ষ তারা। ওই সিরিজের সেই স্মৃতি নিয়েই আছি। আমাকে আপনারা চেনেন ওই পারফরম্যান্সের কারণেই। বাংলাদেশের মানুষ আমাকে চেনে ওই পারফরম্যান্সের জন্যই। একশ বছর পর হয়তো সেটির কারণে আমি গণ্য হবো। ওই রেকর্ডটি আমার জন্য অনুপ্রেরণা।’