প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যার নাম। এই সমস্যা ধীরে ধীরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। তবে এই ঘটনার কুশীলবরা অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে উদাহরণ তৈরি করেছে। জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হওয়া ১২ শিক্ষার্থী এবং এর সঙ্গে জড়িত আরও ৩ শিক্ষার্থীসহ মোট ১৫ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের বৈঠকে তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। এসব অভিযোগ ক্রমেই বিষফোঁড়ার মতো হয়ে উঠলেও সবাই যখন এ বিষয়ে নিশ্চুপ, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পদক্ষেপ প্রশংসার যোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমরা অভিনন্দন জানাই। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন কঠোর পদেক্ষেপ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেরও এখান থেকে শেখার আছে বলে আমরা মনে করি। প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং জালিয়াতির মাধ্যমে একবার ভর্তি হয়ে গেলে কিংবা কোন পরীক্ষায় পাস করলেও পরবর্তীতে যেকোন সময় এটা প্রমাণিত হলে ভর্তি কিংবা ফল বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে, ঢাবির এই পদক্ষেপের মাধ্যমে এটাই এখন অপরাধীদের কাছে বার্তা হিসেবে যাবে। এছাড়া যে যেই দলের হোক কিংবা ক্ষমতাশালী হোক না কেন তাদেরকেও এখানে ছাড় দেয়া হয়নি। এটা অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ। এছাড়া প্রায় একইসময়ে ঢাবিতে আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে। তা হলো- নৈতিক স্খলনের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে অব্যাহতি। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি অনাকাঙ্খিত এবং দুঃখজনক হলেও এই কঠোর পদক্ষেপ আমাদের আশান্বিত করে তোলে। বিশেষ করে শিক্ষকদের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি যেকোন জাতির জন্য লজ্জার বিষয়ও বটে। এই বিষয়টি আমাদের শিক্ষক সমাজ যতো দ্রুত বুঝবেন, ততোই মঙ্গল। ব্যক্তি কিংবা দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করে শিক্ষকরা আবারও প্রকৃত মানুষ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করলে ভবিষ্যতে জালিয়াত কিংবা প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী শিক্ষার্থী শূন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আমরা আশা করি।