বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতর অবস্থিত সদ্যবিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে ৭৬ জন তাদের পুনর্বাসনের স্থানটি প্রত্যক্ষ করতে কুচবিহার এসেছেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমান্ত চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়নের কয়েক মাস পর প্রাথমিকভাবে এই ব্যক্তিরা তাদের ভবিষ্যৎ আবাসস্থল দেখার সুযোগ পেলেন।
ওই ৭৬ জনের মধ্যে গত বুধবার ৩৯ জন এবং বৃহস্পতিবার ৩৭ জন কুচবিহারে আসেন। আগতদের মধ্যে দুইজন শিলিগুড়িতে তাদের আত্মীয়দের বাসায় অবস্থান করছেন। বাকিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।
কুচবিহার জেলা প্রশাসক পি উলাগানাথান জানান, দিনহাটা পৌরসভায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। তাদের সম্ভাব্য আবাসস্থল তারা দেখবেন। নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত তারা যতবার ইচ্ছা সে জায়গা পরিদর্শন করতে পারবেন।
নভেম্বরের ৩০ তারিখের পর মানুষ বিনিময় শুরু হবে বলে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। দিনহাটাতে প্রস্তুত রাখা বাড়িগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হবে ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের।
উলাগানাথান বলেন, ভারতের সীমান্তে অবস্থিত বাংলাদেশী ছিটমহলের বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছিলো। এদের মধ্যে ১ হাজারেরও বেশি মানুষকে ‘জব কার্ড’ ইস্যু করা হয়েছে। ৯’শ জনেরও বেশি মানুষ পেয়েছেন নতুন ব্যাংক একাউন্ট।
তিনি আরো বলেন, এই এলাকায় রাস্তা নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এখানকার বাসিন্দাদের ভোটার পরিচয়পত্র প্রদান করতে আমরা নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’
বাংলাদেশ থেকে বুধবার রাতে সেখানে পৌঁছনো মিজানুর রহমান তাদের ভারত যেতে কয়েক ঘন্টা বিলম্ব হওয়ার জন্য বিভিন্ন জটিলতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “ভ্রমণ ভিসার জন্য বাংলাদেশে আমাদের কাছে ৫৩৫ রুপি দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখান করি কারণ আমরা ভারতে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি না। কয়েক দফা আলোচনার পরও শেষ পর্যন্ত আমাদের সেই রুপি পরিশোধ করতে হয়।”
মিজানুর যোগ করেন, ভারতে আসার আগে বাংলাদেশে আমাদের সহায় সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করতে চেয়েছিলাম। আমরা এই ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলাম। আমি আশা করি প্রশাসন এই ব্যপারে কিছু করবে।
বাংলাদেশে ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনারের কাছে অনেকেই একজন প্রতিনিধি উপস্থাপন করে অভিযোগ করেছেন, তাদের ভারতে আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। কমপক্ষে ১ হাজার জনকে জোড় করে আটকে রাখা হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেন তিনি।
উলাগানাথান এই বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। ডেপুটি হাই কমিশনারের কাছে এই রকম প্রতিনিধি উপস্থাপনের ব্যাপারে নিজস্ব সূত্রে জানতে পেরেছেন বলে জানান দিনহাটার এসডিও সজল কুমার সরকার। তবে এখনও প্রশাসনিকভাবে তা নিশ্চিত করা হয়নি বলে তিনি জানান।
সূত্র : দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস