রাশিয়া এবং ভারতের পর বেশ কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশেও আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়া ব্লু হোয়েল গেমের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এর শুরু হয়েছিল রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী অপূর্বা বর্ধনের মৃত্যুর পর। অপূর্বার বাবা-মা দাবি করেছিলেন, তাদের মেয়ে ব্লু হোয়েল গেমের কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। এরপর থেকে পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই গেমের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করে। তবে ওই ঘটনায় পুলিশ দাবি করেছিল, অপূর্বার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ব্লু হোয়েলের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ব্লু হোয়েলের কথিত চ্যালেঞ্জ নামে বেশ কিছু ধাপ পার করে তারপর চূড়ান্ত ধাপে আত্মহত্যার চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়। কিন্তু অপূর্বার শরীরে এমন কোন চিহ্ন ছিল না। এছাড়া দেশের গেম সংশ্লিষ্টরাও তখন বলেছিলেন, বাংলাদেশে ব্লু হোয়েল গেম বা আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার মতো কোন কমিউনিটি নেই। অপূর্বার মৃত্যু শোকের মধ্যেও এই খবর কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছিল। কিন্তু এই আশা এখন কিছুটা হলেও নিরাশা হয়ে দেখা দিয়েছে। এবার কৌতুহলবশত কথিত ব্লু হোয়েল গেম খেলতে গিয়ে রাজধানীর মিরপুরের সারোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের আত্মহত্যা চেষ্টার খবর পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরাও ব্লু হোয়েল গেমের কারণে তার আত্মহত্যা চেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়াও চট্টগ্রামসহ আরও কিছু জায়গায় এই গেমের কারণে কিশোরদের আত্মহত্যা চেষ্টার খবর ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এটা খুবই হতাশার খবর। কিশোর-কিশোরিদের এই আত্মঘাতী গেম থেকে সরিয়ে আনতে অভিভাবকসহ সকলের আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে বলে আমরা মনে করি। অন্য কোন কারণে আত্মহত্যা চেষ্টা হলে সেটাও খতিয়ে দেখা জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু সরকারের পদক্ষেপের আশায় না থেকে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এছাড়া এই মরণ ফাঁদ থেকে বের করে আনতে হলে সন্তানকে সময় দেওয়া, মোবাইল ও কম্পিউটারে অধিক সময় গেমস এর পেছনে সময় ব্যয় করতে না দেওয়া এবং বাবা মার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারিবারিক অটুট বন্ধন দরকার। পাশাপাশি সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহী করে তুলতে হবে বলে আমরা মনে করি। একইসঙ্গে এই বিষয়ে গুজব না ছড়িয়ে এ সংক্রান্ত ওয়েব লিংক/এড্রেস/অ্যাপস এর তথ্যাদি অফিস সময়ে ২৮৭২ নাম্বারে ফোন করে বিটিআরসিকে অবহিত করা যেতে পারে।