বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বহুলাংশে কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা বিকল্প খুঁজছেন। আর এর সুবিধা নিচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশগুলোর রপ্তানি যখন কমছে তখন গত মাসে বাংলাদেশ ৩২০ কোটি ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রফতানি আয় করেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমেরিকার ক্রেতারা সস্তায় পণ্য কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি আরো বাড়বে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৭ শতাংশ। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির একটি হলো এদেশ। বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে গবেষণা করা মার্কিন গণমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ বিজনেসে’ এমন এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
‘বিএমআই রিসার্চের’ এশিয়া বিশ্লেষক রাফায়েল মক বলেন, মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের শিল্প ও রপ্তানি খাতের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আমরা আশাবাদী।
তিনি আরো বলেন, দেশটিতে রয়েছে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী এবং শ্রমের মজুরিও তুলনামূলক কম।
বিশ্বের বড় বড় উদীয়মান অর্থনীতিগুলো যেখানে ধাক্কা খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো ফ্রন্টিয়ার অর্থনীতির দেশগুলো দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের মার্কেট শেয়ার বাড়ছে আর চীনের মন্দার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার পুনর্দখল করছে।
৬৮টি দেশে ৬৬ হাজার লোকের ওপর উইন-গ্যালাপ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যাচ্ছে ২০১৬ সালে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি আশাবাদী।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজর ডলার ছাড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে আয় তিনগুণ বাড়িয়ে ৪ হাজার ডলারে উন্নীত করতে চান। আর এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর নেপথ্যে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি।
বাংলাদেশের জিপিডির ২০ ভাগই আসে রফতানি থেকে। রফতানি আয়ের ৮০ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে যার দুই-তৃতীয়াংশই যায় ইউরোপ ও আমেরিকায়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আশাবাদের আরেকটি কারণ তুলনমূলক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। গত বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৮৭০০ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশটির ২০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়।
তবে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলছেন, সস্তা পোশাকের বিকল্প রফতানি খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে বাংলাদেশকে।