চট্টগ্রাম থেকে: শেষ দুই ওভারে দরকার ২০। আগের ম্যাচে শুরুতে ঝড় তোলা মাশরাফী এদিন শেষে। ১৯তম ওভারে সোহেল তানভীরকে কাউকর্নারের উপর দিয়ে প্রথম বলেই ছয়। এই ওভার থেকে আসে ১১। শেষ ওভারে দরকার ৯। ব্রেসনানের কাছ থেকে মাশরাফী সেটাও নিয়ে নিলেন। সেই সঙ্গে ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থেকে ৪ উইকেটে দলকে জিতিয়ে আনেন।
অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই বলে থাকেন, ইনজুরিতে না পড়লে মাশরাফী হতে পারতেন সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। মাঝে মাঝে ব্যাট হাতে কিংবদন্তি পেসার সেটি মনেও করিয়ে দেন। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে টানা দুই ম্যাচে দুটি স্মরণীয় ইনিংস খেললেন নড়াইল এক্সপ্রেস। আগের দিন ১৭ বলে করেছিলেন ৪২।
রংপুরের জন্য এই ম্যাচটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটি জিতে তৃতীয় স্থানে থাকা কুমিল্লাকে ধরে ফেলল দলটি।
প্রথমে ব্যাট করে বাবর আজম ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে রংপুরকে ১৭৪ রানের টার্গেট দেয় নাসিরের সিলেট। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ৫০ রানের ঘরেই ৩ উইকেট হারায় তারা। ধুঁকতে থাকা দলকে টেনে তোলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান বাবর আজম ও টাইগার তারকা সাব্বির রহমান। ৩৭ বলে ৫৩ রান করে রানআউট হন বাবর। সমান বলে ৪৪ রান করে মাশরাফীর বলে বোল্ড হন সাব্বির।
অন্যদের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার করেন ২৬ রান। এছাড়া শেষদিকে হুইটলি ১৭ ও টিম ব্রেসনান ১৬ রান করলে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রানের স্কোর পায় সিলেট।
রংপুরের সবচেয়ে সফল বোলার নাজমুল ইসলাম। নিয়েছেন তিন উইকেট।
রংপুরকে আটকাতে নেমে কথা রাখেন সোহেল তানভীর। গতকাল বলেছিলেন প্রতিপক্ষ দলে গেইল, ম্যাককালামের মত বড় নাম থাকলেও নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করবেন তাদের আটকাতে। তানভীর প্রথম ওভারে গেইলকে ব্রেসনানের ক্যাচ বানান। এদিন ৩ বলে পাঁচ করতে সক্ষম হন গেইল। ম্যাককালাম রান পাচ্ছেন না। তাই তার পরিবর্তে ওপেনে আসেন জিয়াউর রহমান। হতাশ করেননি। ১৮ বলে ৩৬ করে দলকে পথে রাখার চেষ্টা করে যান।
গেইল কিংবা ম্যাককালামকে কিছুটা ফ্রি করে দিতেই শুরুতে কখনো মাশরাফী কখনো জিয়াউর। আগের ম্যাচে মাশরাফী ১৭ বলে ৪২ করেছিলেন। এদিন জিয়াও নিজেকে উজাড় করে দেন।
পাওয়ার প্লের সময় তাকে দেখে ত্রিশগজের ভেতর অফসাইডে পাঁচজন রাখেন সিলেট কাপ্তান নাসির। বাইরে কেউ নেই। এই সময়ে ত্রিশগজের বাইরে যে দুজন দাঁড়াতে পারবেন, তারা লেগ সাইডে; লংঅন এবং ডিপ মিডউইকেটে। ফিল্ডিং পজিশন দেখে মনে হতেই পারে জিয়া বুঝি লেগসাইডে বড় শট বেশি খেলেন। জিয়া করলেন কী, নাসিরকে বুঝিয়ে দিলেন ওই অফসাইড দিয়েও তিনি রান তুলতে পারেন। স্টাম্পিং হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সবকটি শট ওই প্যাকেট ভেদ করে।
ওয়ানডাউনে নেমে ম্যাককালাম এদিন তুলনামূলক বেশি সফল। ৩৮ বলে ৪৩ করেন। বিপিএলে এই মৌসুমে এটাই তার সর্বোচ্চ ইনিংস। আগে এক ম্যাচে করেছিলেন ৩৩।
ম্যাককালাম, জিয়া ফেরার পর মাশরাফীকে নিয়ে বোপারার লড়াই শুরু হয়। আগের দুই ম্যাচে সেট হয়েও বিপদের সময় ফিরে যাওয়া বোপারা এদিনও জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি।
১৭তম ওভারে লংঅনে শুভাগত হোম তানভীরের বলে বোপারার ক্যাচ ছাড়েন। পরের ওভারে রানআউট হয়ে ফিরে যান এই ইংলিশ। যাওয়ার আগে ২৪ বলে ৩৩ করেন। বোপারা ফিরলেও কাপ্তান মাশরাফী ভড়কে যাননি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন নাহিদুল ইসলাম। ৭ বলে দুই চারে ১৪ করে দলকে জয় এনে দেন। মাশরাফীর ইনিংসে ছিল দুটি বিশাল ছক্কার মার।