ব্যাংকে অর্থ জমাতে কিছুটা বিমুখ হচ্ছে অসহায় কর্মজীবী পথশিশুরা। চলতি বছরের জুন শেষে বিভিন্ন ব্যাংকে তারা জমা করেছেন মোট ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ লাখ টাকা কম। তবে এই সময় বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের হিসাব সংখ্যা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ১৪৭টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মজীবী পথশিশু-কিশোরদের ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কিন্তু এখন (২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) তাদের ব্যাংক হিসাবে মোট স্থিতির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা কম।
তবে জমার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে হিসাব খোলার সংখ্যা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ১৯টি ব্যাংকে ১৫টি এনজিওর সহায়তায় কর্মজীবী পথশিশু-কিশোররা ৫ হাজার ১৪৭টি হিসাব খুলেছে। ৩ মাস আগে অর্থাৎ এ বছরের মার্চ শেষে হিসাবের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৭৯৪টি। সেই হিসাবে ৩৫৩ জন পথশিশু নতুন করে ব্যাংকে তাদের হিসাব খুলেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৩০ জুন পর্যন্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ৪৮৮টি হিসাবের বিপরীতে ১১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা জমা নিয়ে মোট হিসাব ও স্থিতির ভিত্তিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
সবাইকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ১০ টাকার বিনিময়ে পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এসব ব্যাংক হিসাব থেকে কোন সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করা হয় না।
এসব পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব দেখভাল করছে দেশের ১৫টি এনজিও। অধিকাংশ পথশিশুর কোনও অভিভাবক না থাকায় এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের অভিভাবক হয়ে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে যে ১৫টি এনজিও পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব দেখভাল করছে সেগুলো হলো– মাসাস, সাফ, উদ্দীপন, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ব্র্যাক, নারী মৈত্রী, সিপিডি, প্রদীপন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, এএসডি, বাংলার পাঠশালা, ইবিসিআর প্রকল্প, ঘাসফুল, এডুকেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও পরিবর্তন।