সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডিজিসেক কাউন্সিল এর ডিরেক্টর দেশমন্দ দেভেন্দ্র বলেছেন, সাইবার বিষয়ক কোন দুর্ঘটনা ঘটার পরে সবসময় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায় বাংলাদেশকে। দুর্ঘটনার কোন পূর্বপ্রস্তুতি থাকে না এখানে। সাইবার নিরাপত্তায় উভয় দিক থেকেই সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই।
এই জায়গাতে শুধু প্রতিক্রিয়াশীল নয় ক্রিয়াশীল হওয়ারও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক ‘সাইবার সিকিউরিটি-ফার্স্ট রেসপন্ডার: থ্রেট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
দেশমন্দ দেবেন্দ্র বলেন, অনলাইন গেম ও ইমেইলের মাধ্যমে অনেক সময় লোভনীয় অফার দেওয়া হয়। সেই লোভে পড়ে লিংকে ক্লিক করলেই সব তথ্য চলে যায় হ্যাকারের কাছে। সাইবার ঝুঁকির জন্য ম্যালওয়্যার দায়ী নয়, দায়ী হচ্ছেন ব্যবহারকারী ব্যক্তি। এসব লোভনীয় লিংকে ক্লিক না করলে কোন সমস্যা হয় না। ঝুঁকি এড়াতে প্রতিটি পর্যায়ের কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন এই সাইবার বিশেষজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সাইবার ঝুঁকির বিষয়ে খুবই সর্তক। এখনই সময় সাইবার বিষয়ে সচেতন থাকার। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা ব্যাংকে/সিইআরটি/কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম নামে একটি করে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। যারা দুর্ঘটনার সাথে সাথে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও সরকারের নির্দেশনায় আগের চেয়ে সাইবার নিরাপত্তা অনেক শক্তিশালী হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সাইবার ঝুঁকি থাকবেই। তবে এই ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। কোন সমস্যা হলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক এড়াতে হলে এইডস এর স্লোগানের মত সবার মনে রাখা উচিত, বাঁচতে হলে জানতে হবে।
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর বরকত এ খোদা বলেন, প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে পাশাপাশি করে তুলেছে ঝুঁকিপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এখন অনলাইন ব্যাংকিংয়ের প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে অবাধে অনলাইন ব্যাংকিং সাইবার ঝুঁকির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনাসভায় অংশগ্রহণ করেন দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আসা প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে একজন জানান, সাইবার বিভাজ্য শুরু হয় শাখা পর্যায় থেকে। তাই শুধু হেড অফিসের জনশক্তি নয় শাখা পর্যায়ে জনশক্তিকেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া সব সাইবার ঝুঁকি এড়াতে নিজস্ব ডোমেইন ইমেইল ব্যবহারের পরামর্শ দেন অনেকে।