বড় বোনের স্বামী সুমন বেশ কয়েক বছর বৃষ্টিকে উত্যক্ত করলেও একপর্যায়ে সেটা অনৈতিক সম্পর্কে রূপ নেয়। ঘটনা জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা হয়। এরপর নিজের বোনের সংসার বাঁচাতে সুমনের কাছ থেকে দূরে সরতে থাকলে দুলাভাইয়ের হাতে খুন হয় বৃষ্টি।
চাঞ্চল্যকর বৃষ্টি হত্যা মামলার একমাত্র আসামি সুমনকে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা হতে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান।
আসামি সুমন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে জানিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন: সুমন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক। ২০১০ সালে ভিকটিম বৃষ্টির মেঝ বোন হাসনার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত তিন চার বছর যাবৎ সে তার শ্যালিকাকে উত্যক্ত করত এবং এক পর্যায়ে সেটা অনৈতিক সম্পর্কে গড়ায়।
‘পরে বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়, এবং বোনের সংসার বাঁচাতে ভিকটিম বৃষ্টি ধীরে ধীরে সুমনের কাছ থেকে দূরে সরে আসতে থাকে। এ ঘটনা সুমনের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বৃষ্টি মহাখালী সাততলা বস্তিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতো। সে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতো।’
এমরানুল হাসান বলেন: গত ১৬ জুলাই নিজেদের মধ্যে চূড়ান্ত ফয়সালা করতে সুমন মগবাজারের একটি হোটেলে বৃষ্টিকে নিয়ে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেয়। তাদের নিজেদের আগের বিষয়গুলো নিয়ে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সুমন জোর করে বৃষ্টির সঙ্গে অৈনিতক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে বৃষ্টির ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওড়নার একাংশ গলায় পেচিয়ে ও অন্য অংশ হোটেলের ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে সুমন পালিয়ে যায়।
সুমনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। গত ১৬ জুলাই বৃষ্টি হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা অানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।