জাতিসংঘের টেকনোলজি ব্যাংকের সদস্য সোনিয়া বশির কবির এর নেতৃত্বে “দি
চেঞ্জমেকার” নামে আসন্ন ২৫ জুনের বেসিস নির্বাচনে একটি প্যানেল পরিবর্তনের
অঙ্গীকার করেছে। এই প্যানেলের একজন সদস্য সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর। আইসিটি পলিসি, গর্ভনেন্স, টিভিইটি এবং কনসালটেন্সি তার দক্ষতার ক্ষেত্র।
সুফি ফারুক দেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ আইটি হেড হিসেবে একটেল (বর্তমান রবি) কে নেতৃত্ব দিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন দেশের সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানির কাতারে।
তিনি ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপলিকেশন ডেভেলপার কোম্পানি ‘এভাটিক্স’ এর চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। বেসিস নির্বাচন নিয়ে তার মুখোমুখি হয়েছিল চ্যানেল আই অনলাইন।
প্রশ্ন: আপনি তো এই ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন?
সুফি ফারুক: আমি বিনীত ভাবে বলতে চাই, আমি আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন নই। বলতে পারেন বেসিস রাজনীতিতে নতুন। খুব কম বয়সে তথ্য প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হয়েছি। আমি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবসা এবং প্রশিক্ষণের সাথে জড়িত ১৯৯৭ সাল থেকে। তাই খুব বিনীত ভাবে বলতে চাই- এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমি শুধু পুরোনই না, বিগত ১৮ বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে বহুমাত্রিক অবদান রেখে আসছি।
প্রশ্ন: ভোটারদের জন্য আপনারা কি পরিবর্তন নিয়ে আসবেন?
সুফি ফারুক: এর বিস্তারিত আমাদের মেনুফেস্টোতে পাবেন। তবে সংক্ষেপে বললে, অতীতে হওয়া দরকার ছিল অথচ করা হয়নি, এরকম বিষয়গুলো যেমন গুরুত্ব পাবে; ঠিক একইভাবে আমাদের বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিকে একটি ফ্রগ জাম্প দিয়ে কিভাবে পিছিয়ে পড়া পথটা কাভার করার যায় সেই বিষয়গুলোও থাকবে। আমাদের আলাদা আলাদা করে গুরুত্ব থাকছে – পলিসি, অবকাঠামো, জনশক্তি, স্থানীয় বাজার ও রপ্তানির ওপরে।
প্রশ্ন: আপনাদের প্যানেল চেঞ্জমেকার এর নির্বাচনে আসার প্রেক্ষাপট কি?
সুফি ফারুক: বেসিস সদস্যদের উন্নয়ন ছাড়া বাংলাদেশের আইসিটি খাতের টেকসই উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। বেসিস সদস্যদের এই দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধানের লক্ষ্যে বেসিসের সম্মানিত সিনিয়র ও তরুণ সদস্যদের পরামর্শে, আমরা সত্যিকারের সফ্টওয়্যার ও আইটিইএস ব্যবসায়ী এবং দীর্ঘ সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা পেশাগত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উদ্যোক্তাবৃন্দ একটি দলে একীভূত হয়েছি।
প্রশ্ন: বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
সুফি ফারুক: মাইক্রোসফট প্রতিনিধি নিয়ে ক্যাম্পেইনটি হচ্ছে সেটি আসলে একটি ভোট কেন্দ্রিক সঙ্গবদ্ধ অপপ্রচার। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে অজানা ভয় তৈরির একটি কৌশল। এ ধরনের অপপ্রচার গণভোটে কখনও কখনও কার্যকর হয়। তবে আমার মনে হয় না বেসিস এর ভোটারদের উপরে এর কোন প্রভাব পড়বে।
প্রশ্ন: সোনিয়া বশির মাইক্রোসফট এর মালিক নন। একজন কর্মী কিভাবে মালিক দের সংগঠন এর প্রতিনিধিত্ব করবেন?
সুফি ফারুক: প্রথমত এটি কোম্পানি ওনার্স এসোসিয়েশন নয়। এটি কোম্পানিগুলোর এসোসিয়েশন। যেখানে কোম্পানির প্রতিনিধি প্রতিনিধিত্ব করেন, মালিক নয়। কোম্পানি সিদ্ধান্ত নিয়ে এসোসিয়েশনে প্রতিনিধি পাঠান। প্রতিনিধি শেয়ারহোল্ডার হতেও পারে, নাও পারে।
প্রশ্ন: তিনি মাইক্রোসফট এর স্বার্থ দেখবেন, দেশি কোম্পানির স্বার্থ বিরোধি কাজ করবেন। এমন অভিযোগের কি জবাব দিবেন আপনি?
সুফি ফারুক: আমি বরং আপনাকে প্রশ্ন করি- মাইক্রোসফট আমাদের দেশি কোম্পানির কোন প্রডাক্ট এর সাথে প্রতিযোগীতা করে? না মাইক্রোসফট এর সাথে আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কোন প্রতিযোগিতা নেই। বরং ওদের প্রডাক্ট আমাদের প্রডাক্ট তৈরি, বিপণন এবং বিক্রয়ের জন্য প্রয়োজন হয়। সুতরাং মাইক্রোসফট এর স্বার্থে দেশি কোম্পানি বিরোধী হবার প্রশ্ন অবান্তর।
প্রশ্ন: নারী নেতৃত্বের সক্ষমতা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন করেছে?
সুফি ফারুক: আমার সবচেয়ে কষ্টের জায়গাটি হল- কেউ কেউ দেখলাম নারী কে দিয়ে হবে না টাইপ ক্যাম্পেইনও করছেন। এই যুগে বাংলাদেশে বাস করে, তথ্য প্রযুক্তি খাতে কাজ করে, যদি কেউ এরকম কথা বলেন, তাকে নিয়ে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই। ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রশ্ন: বেসিস এর প্রকাশ করা ১ বিলিয়ন ডলার টার্গেটসহ অন্যান্য বিষয়ের ধারাবাহিকতার প্রশ্নে কি বলবেন?
সুফি ফারুক: ১ বিলিয়ন বা ৫ বিলিয়ন টার্গেট বিষয়ে আমরা এখন কিছু বলতে পারছি না। কারণ এই ঘোষণার ব্যাক ক্যালকুলেশন আমরা পাইনি। তবে আমরা মনে করি- টার্গেট যাই হোক, সেটা অর্জনের জন্য পলিসি, জনবল, অবকাঠামো, বিনিয়োগ এবং বাজারের বাস্তব সমন্বয় থাকতে হবে। আগে অংক দিয়ে মিলাতে হবে। এর পরে বাস্তবায়নে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রশ্ন: মূলধারার সফওয়্যার বা সেবাখাতের অনেক প্রতিষ্ঠানই বেসিস সদস্য নয়। সদস্য হলেও তারা বেসিস এ কার্যকরি কোন ভূমিকা রাখছে না। এ বিষয়ে আপনারা কি করবেন?
সুফি ফারুক: এটি ব্যবসায়ীদের সংগঠন। আমরা ব্যবসায়ীদের জন্য কোন ভ্যালু তৈরি করতে না পারলে তাদের জোর করে তো আর এখানে অ্যাকটিভ রাখা যাবে না। আমরা তাদেরকে আগ্রহী করতে ভ্যালু তৈরি করবো, যেন তারা এখানে যুক্ত হন এবং অবদান রাখেন।
আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য, চ্যানেল আই অনলাইনকেও ধন্যবাদ।