বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ব্যাংকটির প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির কেলেঙ্কারিতে নিজেকে দোষী মনে করেন না।
সোমবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এসময় শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু বলেন, যে সব অভিযোগগুলো তদন্তাধীন রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছে। আমি যেসব প্রশ্নের উত্তর জানি, সেগুলোর দিয়েছি। অভিযোগগুলো এখনো তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে, এখনো প্রমাণিত হয়নি। প্রয়োজন হলে আরও সহযোগীতা করব।
বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতির যে অভিযোগ এসেছে, তাতে তখনকার চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের দায় কতটা বলে মনে করেন- এমন প্রশ্নে বাচ্চু বলেন, “এখনও অভিযোগের তদন্ত চলছে। এখনও কিছু প্রমাণ হয়নি। কাজেই এটা বলা এখন মুশকিল। তদন্ত চলছে, দেখা যাক কী হয়।”
আবদুল হাই বাচ্চুকে সোমবার সকাল পৌনে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত মাসের ২৩ নভেম্বর দুদক আবদুল হাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে। ফলে এবারই প্রথম ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। কমিশনের পরিচালক জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি বিশেষ দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ঋণ কেলেঙ্কারির এ ঘটনায় দুদকের এই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে গত ২২ নভেম্বর থেকে। এর আগে রোববার পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের সাবেক ১০ পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে ব্যাংকটির তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। গুলশান শাখায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখার ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখায় প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা ও দিলকুশা শাখায় ১৩০ কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ শনাক্ত করা হয়।
এছাড়া বেসিক ব্যাংকের নিজেদের তদন্তে আরও এক হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি প্রকাশ পায়। বেসিক ব্যাংকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে।