মুন্সিগঞ্জের জেলার শ্রীনগরের মালখানগরের ধলেশ্বরী নদী উপর শতবছর ধরে বসতি গড়েছে প্রায় দুইশত পরিবার। ভাসমানভাবে গড়ে ওঠা ওই পরিবারগুলো ‘বেদে পল্লী’ হিসেবে পরিচিত। সেখানকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি স্কুল। ‘আলোকিত শিশু’ নামে ওই স্কুল উদ্বোধন করলেন মডেল, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জনপ্রিয় এই তারকা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বেদে পল্লীর ওইসব শিশুদের সঙ্গে দুপুরের পর থেকে সময় কাটিয়েছেন তিনি। তাদের সঙ্গে গল্প করেছেন, লেখাপড়া, সুবিধা অসুবিধার খোঁজখবর নিয়েছেন ফারিয়া।
তিনি জানান, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ‘আলোকিত শিশু’র সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি।
‘আজকের শিশুরা আগামীর ভবিষ্যৎ। সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের যদি সঠির শিক্ষার ব্যবস্থা করা যায় তবে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নত হবে। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে তারা তাদের জীবনকে বদলে দেবে। ‘আলোকিত শিশু’ স্কুলের মাধ্যমে তারা শিখতে পারছে। এতদিন অস্থায়ীভাবে ওদের ক্লাস হচ্ছিল। এবার একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা হল। ইতোমধ্যে এখান থেকে পিএসসি’তে উত্তীর্ণ হয়েছেন অনেকে, মাধ্যমিকেও অনেকে পড়ছেন। বর্তমানে এ স্কুলে ৪৫ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। সবসময় ওদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো।’-বলছিলেন শবনম ফারিয়া।
বেদে পল্লীর আলোকিত স্কুল উদ্বোধনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের পরিচালক আরিফ খান, আলোকিত শিশু’র প্রতিষ্ঠাতা মিথুন দাস কাব্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিবাবকবৃন্দ।
স্কুল উদ্বোধন শেষে সেখানে তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা কবিতা পাঠ এবং নাচ প্রদর্শন করেন। আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেড সকল শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাগ এবং আলোকিত শিশু শিক্ষার্থীদের টি-শার্ট বিতরণ করে।
শবনম ফারিয়া বলেন, এসব পেয়ে বেদে পল্লীর ওইসব শিশুরা ভীষণ খুশি হয়। তাদের অভিভাবকদের চোখেমুখেও তৃপ্তির ছাপ দেয়া যায়।
আলোকিত শিশু’র প্রতিষ্ঠাতা মিথুন দাস কাব্য বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি শিশু শিক্ষার সমান সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। আমরা সেই সুযোগ সবাইকে সমানভাবে প্রদান করতে চাই। এ লক্ষ্যে আলোকিত শিশু কাজ করে যাচ্ছে। বেদে, মেথরসহ যারা সমাজে তুলনামূলক সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকেন তাদের নিয়ে কাজ করছে আলোকিত শিশু।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগটি আইডিএলসি-এর বিশেষ সিএসআর প্ল্যাটফর্ম ‘খুশির খেয়া’র অংশ হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। আমাদের আলোকিত শিশু’র বেদে সম্প্রদায়ের এ স্কুলটিতে তাদের সাহায্যে আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আমরা ভবিষৎতে এভাবে একসাথে কাজ করে যেতে চাই।