রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত আগুন লাগা এফআর টাওয়ার বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি করা হয়নি। ওই ভবনে ১৮ তলা নির্মাণ করার অনুমোদন থাকলেও তৈরি করা হয়েছিল ২৩ তলা ভবন। অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরে এসব তথ্য বের হতে শুরু করেছে।
এবিষয়ে অগ্নিকাণ্ডের পরে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, এটা গাফিলতি না, হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার জন্য যেসব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তাই নেয়া হবে। শুক্রবার সকালে এফ আর টাওয়ারের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কথা বলেন। আবার অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে অবশ্যই নিরাপত্তার দায়িত্ব ভবন মালিককে নিতে হবে।
বিষয়গুলো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভবন মালিক ও অবৈধ ভবন নির্মাণ কিভাবে অনুমতি পায়, তা নিয়ে আলোচনা ও সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে। রাজউকসহ রাজধানীতে ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের ধারা ও দুর্নীতি নিয়েও কথা হচ্ছে। এঅবস্থায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে রাজউকের তদন্তদল প্রতিবেদন প্রকাশ করবে এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এফ আর টাওয়ার সংলগ্ন সকল বহুতল ভবনের ত্রুটি-বিচ্যুতি পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজউক চেয়ারম্যান।
রাজউক চেয়ারম্যানের এই উদ্যোগ হয়তো এফআর টাওয়ারের অনিয়ম বের করবে। কিন্তু রাজধানীসহ সারাদেশে যেসব ভবন বহুবছর আগে অনিয়মের ফল হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলো কিভাবে অনুমতি পেল? এই প্রশ্ন আমাদের যেমন ভাবাচ্ছে তেমনি এর উত্তর রাজউক কর্তৃপক্ষ দেবেন কিনা, তা নিয়ে বাড়তি সংশয় যোগ হয়েছে।
কোনো একটি ঘটনা ঘটলে ও তা আলোচিত হলেই শুধুমাত্র ব্যবস্থা নেবার কালচার থেকে আমাদের বের হয়ে আসা জরুরি বলে আমরা মনে করি। আমাদের আশাবাদ, রাষ্ট্রের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সারাবছর সবধরণের নির্মাণ কার্যক্রম সঠিক নিয়মে করবেন এবং জনগণকে নিরাপদে রাখতে সবধরণের পদক্ষেপ নেবেন।