বায়ান্ন’র ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে নির্মিত হয়েছিলো প্রথম শহীদ মিনার। নামকরণ করা হয় ‘শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ’। শ্রদ্ধা জানাতে পর দিনই স্মৃতিস্তম্ভে ভিড় করেন হাজারো বাঙালি। ২৬ ফেব্রুয়ারি স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে দেয় পুলিশ।
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদদের স্মরণে ২২ ফেব্রয়ারী গায়েবানা জানাযা শেষে তাদের সম্মানে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মানের পরিকল্পনা করা হয়। বদরুল আলম ও সাঈদ হায়দারের নকশায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারী রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলে সব কার্যক্রম। সার্বিক তদারকির দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের নেতারা।
ভাষা সংগ্রামী সাঈদ হায়দার বলেন, তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ নতুন নির্মিত হয়েছে। ইট, বালু, সিমেন্ট সব মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে ছিল। তখন সবাই গিয়ে সেখানে কাজ শুরু করে।
আরেক ভাষা সংগ্রামী মির্জা মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই কাজটা সম্পূর্ণ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা করে। ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসে নাই। ইট তো বাইরেই ছিল। একটা রুমের তালা ভেঙে সিমেন্ট বের করে আমরা কাজ করি।
পর দিন সকালে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসে হাজারও মানুষ। শহীদদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা দেখে স্মৃতি স্তম্ভটি ভেঙ্গে ফেলে পুলিশ।
মির্জা মাজহারুল ইসলাম বলেন, মানুষ এসে ফুল দিয়ে আমাদের কাগজের লেখা ঢেকে ফেলেছিল। আর ওর মধ্যে গহনাপত্রও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন দাঁড়িয়ে থাকার পর এই রকম একটি মিনারকে ইপিআর ভেঙে একেবারে গুড়া করে ফেলে। ভাঙা গুড়াও তারা গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়।
১৯৫৬ সালের ২১ ফেব্রয়ারি শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের পাশেই আবারো নতুন করে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।