ঠাকুরগাঁওয়ের দরিদ্র পরিবারের সন্তান ‘বৃক্ষবালক’ রিপনের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী ও কয়েকজন সহৃদয়বান ব্যক্তি। নিজেরা তো আছেনই রিপনের দুস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ফেসবুক পোস্টে ‘বৃক্ষমানব’ আবুল বাজানদারের মতো রিপন ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক ফজলুল বারী লিখেছেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, ঠাকুরগাঁও’ বৃক্ষ শিশু রিপনের চিকিৎসার দেখভালের দায়িত্বটিও আমরা নিলাম। এ নিয়ে রিপনের বাবা-মা’র সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। রিপনকে নিয়ে এর আগে কি কি ঘটেছে তা উল্লেখ করে লিখেছিলাম। পুরনো বিষয়টি নিয়ে ঘাটতে চাই না। রিপনকে নিয়ে ঢাকা আসার পর থেকে খুব কষ্টে আছেন তার দরিদ্র বাবা। অসহায়ের মতো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের বারান্দায় রাতের বেলা ঘুমান। তার কষ্ট আমাদের স্পর্শ করেছে।
রিপনের চিকিৎসা যথারীতি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডাঃ সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বেই হবে। আমাদের চার সদস্যদের একটা টিম চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবারটিকে সাপোর্ট দিয়ে যাবো।
আমাদের প্রিয় ডা: শারফুদ্দিন আহমেদ ভাই, আরাফাত হোসাইন এবং কাজী বাহার থাকবেন এই টিমে। আমাদের হয়ে রিপনকে সর্বক্ষণিক দেখভাল করবে আমার প্রিয় প্রজন্ম বাহার। দেশবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা-সাপোর্ট সংগ্রহের কাজটি করবো আমি। আপনাদের সবাইকে টাইম টু টাইম আপডেট জানাবো প্রিয় দেশবাসী।
বিডিনিউজে রিপনকে নিয়ে প্রথম লিখেছিলো আমার প্রিয় প্রজন্ম এ আর হৃদয় খান । গরিব বাবা মাহোন্দ্র রাম, মা গোলাপি রানীর দুঃখের সন্তান রিপন। এই বাবা গ্রামে জুতো সেলাইর কাজ করে সংসার চালান। তাদের আরও দুটি মেয়ে আছে। ক্লাস টু-তে পড়ে রিপন। তার সমস্যাটি এখনো আবুলের মতো জটিল পর্যায়ে গড়ায়নি। তবে শেঁকড়ের মতো মাংস পিন্ড রিপনের ঠোঁটে-কানেও গজিয়েছে। বাচ্চাটি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। তার শারীরিক চিকিৎসা সক্ষমতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। পরিবারটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়াতে তাদের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোকে শ্রদ্ধায় রেখে আমাদের সতর্কভাবে চলতে হবে। কারণ আবুলের অভিজ্ঞতায় আমরা জানি, এ এক দীর্ঘ চিকিৎসা প্রক্রিয়া। এরজন্যে আমরা দেশবাসী, বিশেষ করে ঠাকুরগাঁওর হৃদয়বান যারা এর মাঝে বাচ্চাটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বয়ের কাজটি করে যেতে চাই।
গ্রামে রিপনের যে দুটি বোন আছে তাদেরকেও সাপোর্ট দিয়ে যেতে হবে। কারণ রিপনের বাবার আয় এরমাঝে বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের প্রথম চেষ্টা হচ্ছে পরিবারটির জন্যে একটি কেবিনের ব্যবস্থা করা। রিপনের বাবা’র ফোন নাম্বারটি বিকাশ করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রিপন এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটের শিশু ওয়ার্ডের ৬২১ নাম্বার বেডে আছে। আমাদের সঙ্গে থাকুন প্রিয় দেশবাসী। দোহাই লাগে’।