‘বৃক্ষ-মানব’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আবুল বাজানদারের মতোই বিরল চর্মরোগ নিয়ে রিপন নামে আট বছরের এক শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের প্রথম ‘বৃক্ষ-মানব’ আবুল বাজানদারের জন্য গঠন করা বোর্ডের চিকিৎসকরাই তার চিকিৎসা করবেন।
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁর পীরগঞ্জের কেউট গ্রামের মহীন্দ্রর তৃতীয় সন্তান আট বছর বয়সী রিপন রায়। জন্মের তিন মাসের মধ্যে হাতে-পায়ে ঘামাচিতে আক্রান্ত হয় সে। পর্যায়ক্রমে তা বেড়ে এখন শিশুটির হাঁটাচলা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।
রিপন স্থানীয় স্কুলের ক্লাস টু’র শিক্ষার্থী। হাতে-পায়ের শিকড়ের মতো থাকায় সহপাঠীরাসহ আশপাশের অনেকেই তাকে এড়িয়ে চলে। রিপনের বাবা মহীন্দ্র রায় জানান, এভাবেই সে কোনোরকমে পড়ালেখার কাজ করে। সন্তানকে সুস্থ করতে সবার সহযোগিতা চান মহীন্দ্র রায়।
ঠাকুরগাঁও-এর জেলা প্রশাসকের সহায়তায় রোববার সকালে বার্ন ইউনিটে শিশু রিপনকে নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহকারী রেজিস্টার ডা. মাশরুর-উর রহমান জানান, ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে রেখেছি। আমাদের অধীনে সে ভর্তি থাকবে। এখন আমরা ওর মেডিকেল হিস্ট্রি পুরোপুরি শুনবো এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করবো।
চিকিৎসককেরা বলছেন, দেশে সনাক্ত প্রথম বৃক্ষ-মানব আবুল বাজানদার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আবুলের জন্য গঠন করা মেডিকেল বোর্ড বিরল চর্ম রোগে আক্রান্ত এ শিশুরও চিকিৎসা দেবে।
বৃক্ষমানব আবুলের জন্য গঠন করা মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়কারী অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের ডিসি সাহেব আমাকে ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোন করে জানান যে এমন একটি রোগী আছে ওরা খুব গরীব। আমরা কোনোরকমে তাদের ঢাকায় পাঠাবো। পরে একটি চিঠি লিখে উনি তাদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। শিশুটিকে দেখে মনে হচ্ছে ওর শরীরে রক্তও খুব কম। সেসব দেখে-শুনেই যত দ্রুত সম্ভব আমরা তার অপারেশনের চেষ্টা করবো।
তারা বলছেন, বৃক্ষ-বালক রিপনের জটিলতা কম থাকায় অস্ত্রোপচারে সময় কম লাগবে। এতে সহজেই তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব হবে।