দেশের সেরা মেধাবীদের শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যায় একাধিক ছাত্রলীগ নেতার নাম উঠে এসেছে।
ছাত্রলীগ নেতারা গণমাধ্যমের কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে আছেন বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপ দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা এবং সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।
শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্ররা বলেছেন, গতরাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নিয়ে ‘শিবির’ সন্দেহে জেরা করার পর ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন আবরারকে পেটান।
বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘আবরারকে শিবিরকর্মী সন্দেহে রাত ৮টার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তার মোবাইল ফোনে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেইজে তার লাইক দেয়ার প্রমাণ পাই। সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। সেখান থেকে তার শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই আমরা।’
বিটু জানান, আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল এবং উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা।
জেরা করে শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার পর চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেয়া হয় বলে জানান বিটু। খবর পেয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার সেখানে যান।
‘একপর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে। পরে রাত তিনটার দিকে শুনি আবরার মারা গেছে,’ বলেন বুয়েট ছাত্রলীগের এই সহ-সম্পাদক।
আবরার ফাহাদ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রোববার সন্ধ্যার পরে তাকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে তার সহপাঠীরা। এরপরে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আবরার ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন, ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া।