বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরণে আবার অচল হতে পারে গোটা বিশ্ব। ভারতের এর মধ্যেই ১২টি রাজ্যে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী নতুন সতর্কতায় বেজে উঠছে নতুন শঙ্কা। আমরা কী এই শঙ্কার বাইরে?
রয়টার্স জানিয়েছে: পুরো ইউরোপজুড়ে, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার কিছু দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ছে গুণিতক হারে। জাপানের এক সামরিক ঘাঁটিতে একটি ক্লাস্টার থেকে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১৮০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় প্রধান হ্যানস ক্লুগে ইউরোপের দেশগুলোর জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন: আমরা দেখতে পাচ্ছি, আরেকটা ঝড় আসছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এরইমধ্যে স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে। বড়দিনের পর জনসমাগম ও পার্টি করার ওপর বিধিনিষেধ জারি করেছে জার্মানি। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস মঙ্গলবার তার দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন: করোনাভাইরাস বড়দিনে ছুটি কাটাবেন না; সংক্রমণের আরেকটা ঢেউ আসছে জেনেও চোখ বন্ধ করে রাখা উচিত হবে না। বড়দিনের পরদিন থেকে পর্তুগালে সব বার ও নাইটক্লাব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন: বড়দিনের আগে নতুন কোনো বিধিনিষেধ সেখানে দেয়া হচ্ছে না। তবে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে জনসমাগমে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
সুইডেনে বুধবার থেকেই কড়াকড়ি বাড়ছে। কর্মীদের বাসা থেকে অফিস করতে বলা হয়েছে। বার, ক্যাফে, রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। নভেম্বরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করছে। ইতোমধ্যে ১০৬টি দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতদিন বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে থাকা করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন ধীরে ধীরে জায়গা হারাচ্ছে, বাড়ছে ওমিক্রনের সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে সারা বিশ্বে যত নমুনার জিন বিন্যাস বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তার ৯৬ শতাংশ ছিল ডেল্টা। আগের সপ্তাহে এই হার ছিল ৯৯.২ শতাংশ। আর ওমিক্রনের হার এই এক সপ্তাহে ০.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১.৬ শতাংশ হয়েছে।
বাংলাদেশ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে সফল হয়েছে। বাংলাদেশের মত নিম্ন আয়ের ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশে করোনার মারাত্মক থাবা তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। এটি কিভাবে সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কের ফরচুন পত্রিকায় এক নিবন্ধে তার বিস্তারিত লিখেছেন। এখন নতুন আরেকটি কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি আমরা। ইউরোপ আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা এই নতুন ধরণ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে পুনরায়। এই অবস্থায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা অন্ধকারে আছি। আমরা আশা করি সরকার খুব দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জনমনের উদ্বেগ নিরসন করবে।