বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন শিক্ষার্থীদের বহু দিনের লালিত স্বপ্ন। এজন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, সাধনা। কিন্তু এতকিছু বাদ দিয়ে যদি শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ, তাহলে কেমন হবে?
ঠিক এমনটিই হয়ে আসছে পাকিস্তানে। অনলাইন ভিত্তিক একটি কাল্পনিক নেটওয়ার্ক টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ।
এই অনিয়মের চিত্র তুলে এনেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। তাদের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান ‘১০১ ইস্ট’ এ ভয়াবহ এই অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।
এতে দেখানো হয়েছে, সনদ বিক্রির এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে আক্সাক্ট নামে পাকিস্তানের একটি সফটওয়্যার কোম্পানির বিরুদ্ধে। এই নেটওয়ার্কটি কোনো পড়াশোনা বা পরীক্ষা ছাড়াই টাকার বিনিময়ে সনদ দেয়ার প্রস্তাব করে আসছে।
পাাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের শত শত হাজার হাজার মানুষ এই সুযোগ গ্রহণও করছেন। দুশ্চিন্তার বিষয় হলো সনদ কেনাদের অনেকে চিকিৎসক, প্রকৌশল, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় যোগদানও করছেন।
এই ভুয়া সনদ বিক্রি করে আক্সাক্ট নেটওয়ার্ক কিভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তা উঠে এসেছে। এই সংবাদ প্রকাশের পর আক্সাক্টের প্রতিষ্ঠাতা শোয়াইব আহমেদ শাইখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও হয়েছে।
পুলিশ করাচিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে তল্লাসি চালিয়ে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা, খালি সনদ, তাদের গ্রাহকদের নাম ও ফোন নাম্বার পেয়েছে। পুলিশ আক্সাক্টের কর্মীদের কলরেকর্ডিংসহ তাদের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
তবে শোয়াইব আহমেদ শাইখ জানিয়েছেন, তারা শুধু ওইসব ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে একটি কলসেন্টার পরিচালনা করে আসছে।
এদিকে ভুয়া সনদধারীদের নিয়ে এখন শঙ্কা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। সনদ কিনে যারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে কিনা সে বিষয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পাকিস্তান উচ্চ শিক্ষা কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা আত্তা উর রহমান বলেন, এটি মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। একজন চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত অথচ তার সে বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই, একজন হিসাবরক্ষক অথচ তার হিসাব বিষয়ে কিছু জানা নেই, তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে।